পবিত্র ঈদুল ফিতর, ইসলামের একটি সার্বজনীন উৎসব
মনিরুজ্জামান শামীম
পবিত্র ইসলাম বিশ্ব মানবতার ধর্ম। তাই ইসলামের সমস্ত বিধি-বিধান বিশ্বজনীন ও সার্বজনীন। বিশ্বনবী মুহাম্মদ মোস্তফা সা: সাইয়্যেদুল মুরসালীন। তাই তার প্রদর্শিত মত ও পথই মুসলিম তথা মানব জাতির চরম ও পরম পথ, ইহকাল ও পরকালের মুক্তির একমাত্র সোপান।
মুসলমানদের যাবতীয় ইবাদাতের সাথে নামাজ-রোজার রয়েয়ে নিগূঢ় সম্পর্ক, ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির মহান বারতা। ইসলামের পাঁচটি রোকনে মধ্যে একটি অন্যতস হল সিয়াম বা রোজা, যা প্রতিবছর একটি মাস অত্যন্ত আনন্দ-উৎসবের মাধ্যমে মুসলমানরা পালন করে থাকে। আর এ কষ্টসাধ্য ইবাদাত আন্তরিকতা ও নিষ্টার সাথে পালন করার পর পুরস্কার ঘোসনার জন্য আল্লাহ তায়ালা নির্ধারণ করেছেন একটি দিন, যার নাম ঈদুল ফিতর, যা অনুষ্ঠিত হয় আরবী সাওয়াল মাসের ১ তারিখে। ইসলামে এই ঈদুল ফিতরের মর্যদা অনন্য, যা ইসলামকে ব্যাক্তি ও সামষ্টিকে অতিক্রম করে সার্বজনীন ও বিশ্বজনীন জীবন-ব্যবস্থা হিসাবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। এর অঅধ্মাতিক মর্যাদার পাশাপাশি রয়েছে আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক ও বিশ্বজনীন বৈশিষ্ট্য যা ইসলামের একান্ত নিজশ্ব বৈশিষ্ট্য। পৃথিবিতে যত ধর্ম আছে, কোন ধর্মেই এ জাতীয় সার্বজনীন উৎসবের আয়োজন তো দূরের কথা, এর কাছাকাছি যেতে সাহস করেনাই।
পৃথিবির সব জাতিরই আনন্দ উৎসবের দিন আছে। কিন্তু মুসলমানদের ঈদ অন্য সব জাতির আনন্দ-উৎসবের চাইতে ভিন্ন স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। ঈদের এই স্বাতন্ত্র শুধু তার ভিতরেই নয়, ভিতর-বাহির উভয় দিকেই বিদ্যমান। এই স্বাতন্ত্রের কারণে ইসলামে ঈদ শুধু খুশি আর আনন্দই বিলায় না, বরং সেই সাথে মানবতা বোধ ও মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলীও বিতরণ করে।
ঈদ ইসলামী সভ্যতার এক অনন্য প্রতীক। ঈদ এলে মুসলিম উম্মাহ শুধু নয়, বিশ্ব মানবতা উদ্বেলিত হয়ে ওঠে, ভাতৃত্ববোধ, সহমর্মিতা, সহানুভূতি এবং একজনের দুঃখ, দরিদ্র, আনন্দে আরেকজনের অংশীদার হবার আকুল আকুতির অনুপম প্রতিযোগীতায়।
আজ ঈদের বয়স প্রায় ১৫০০ বছর। রাসুলুল্লাহ সা: মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত করার পর মদীনায় এসে দেখলেন এখানকার লোকেরা বছরে দু’টি উৎসব পালন করে। তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাদের এ দু’টি দিন কি রকম? তারা বললো, সেই জাহেলী যুগ থেকেই আমরা এই দু’টি দিনকে উৎসব হিসাবে পালন করে থাকি। এ দিনে আমরা আনন্দ-তামাসা ও নেশা করে কাটিয়ে দিই। অতিবাহীত করি মদ, জুয়া, নারী ইত্যাদি অপকর্মের মাধ্যমে। অত:পর রাসুল সা: বললেন- শোনো, আল্লাহ তায়ালা জাহেলী যুগের সেই দু’টি দিনের চাইতেও উত্তম দু’টি দিন তোমাদের উপহার দিয়েছেন। দিন দু’টি হলো ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহার দিন। এখন থেকে খুশি ও আনন্দের দিন হিসাবে এ দু’টি দিনকে তোমাদের জন্য নির্দিষ্ট করা হলো। তবে উৎসব পালনের জন্য জাহেলী রীতি-নীতি নয় নির্দিষ্ট হয়ে গেলো, আনন্দ উৎসবের ইসলামী নিয়মকানুন, যার মূলে রয়েছে পাক-পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যমে ঈদগাহ ময়দানে সমবেত হয়ে দু’রাকায়াত নামাজ, দোয়-জিকিরের মধ্য দিয়ে মহান রবের মা প্রার্থনা ও সন্তুষ্টি অর্জন করা। যে ময়দানের উৎসবে থাকবেনা কোন ভেদাভেদ, অনুষ্ঠিত হবে আমীর-ফকীর, রাজা-প্রজা, উজির-নাজির, ধনী-গরীব, সুখী-দুঃখী, মনিব-চাকর, সাদা-কালো মানুষের এক মহা সম্মেলন।
মুসলিম কোন ভৌগলিক জাতির নাম নয়, ভাষা কেন্দ্রীক জাতি নয়, নিরেট নয় কোন প্রচলিত ধর্মীয় জাতি, মুসলমান এক উম্মার নাম, সার্বজনীন মুসলিম উম্মাহ হিসাবে যার বিশ্বজনীন পরিচিতি। কতগুলো সুনির্দিষ্ট বিশ্বাস ও বিধানের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এ উম্মাহ। তাই এটি একটি আদর্শিক উম্মাহ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত, অর্থাৎ মুসলমান একটি আদর্শিক উম্মাহর নাম। এজন্য সারাবিশ্বে মুসলমান একই বিশ্বাস, আদর্শ, নীতির অনুসারী। সারাবিশ্বের মুসলমানের সাংস্কৃতিক ধারা একই রকম। পবিত্র ঈদ ইসলামের এই সার্বজনীন ঐক্যের এক উজ্জল দৃষ্টান্ত।
সারা বিশ্বে শত শত কোটি মুসলমানের হৃদয় জুড়ে আসে প্রতিবছর ঈদ। ঈদের আনন্দ অনুভব করে মুসলিম সমাজের প্রতিটি সদস্য এমনকি অমুসলিমরাও এ আনন্দে অংশীদার হতে দেখা যায় আজ সারা বিশ্বে। পবিত্র ঈদ ধনী-গরীব, সাদা-কালো সকল মুসলমানের জন্য। আরব-আজম তথা এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া যেখানেই আছে মুসলিম সেখানেই মহা সমারোহে পালিত হয়, ঈদ উৎসব। ঈদের আনন্দে অংশগ্রহণের েেত্র সকল মুসলমানের সমান অধিকার। ভৌগলিক সীমানার সাথে নেই এর কোন দূরতম সম্পর্ক, এর সম্পর্ক শুধূমাত্র বিশ্বাস ও আদর্শের সাথে।
বাংলাদেশ একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট দেশ। তাই এখানে ঈদ আসে মহাসমারোহে। ঈদ উদযাপনের জন্য এখানে প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় মাসখানেক আগে থেকেই, যার রেশ কাটতে সময় লাগে আরো এক মাস। আমাদের মাঝে বছর ঘুরে প্রতিবছর মাহে রমজানের শেষে আসে ঈদুল ফিতর। ইসলাম এই ঈদলি ফিতরকে সার্বজনীন রূপ দেয়ার জন্য করে রেখেছে অনুপম ব্যবস্থা। ঈদের খুশি যেন ধনী-গরিব সকলে সমানভাবে অনুভব করতে পারে, ঈদের খুশি থেকে কেউ যেন বঞ্চিত না হয়, সেজন্য বিত্তবাণদের উপর অর্থনৈতিক নির্দিষ্ট দান বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে, যাকে বলা হয় সাদাকাতুল ফিতর। এ ব্যবস্থা ঈদুল ফিতরকে করে তুলেছে মহিমান্বিত।
ঈদুল ফিতর শব্দের বাংলা অর্থ হল ফিতরাহ বা দানের ঈদ বা দানের উৎসব। জগতে ঈদুল ফিতরের ন্যায় দানের উৎসব এককথায় এত বৈশিষ্ট্য মন্ডিত উৎসব আর একটিও দেখা যায়না। পৃথিবীর অন্যান্য সকল ধর্মে বিশেষ বিশেস দিনকে উৎসব হিসাবে ঘোষনা করা হয়েছে, তবে সেটা কোন ব্যাক্তি বিশেষের জন্ম ও মৃত্যু অথবা ঐতিহাসিক কোন ঘটনাকে কেন্দ্র করে। কিন্তু মুসলমানদের ঈদ হল আদর্শকে কেন্দ্র করে প্রতিষ্ঠিত, যার কারণে ঈদ নামক এই মহা উৎসবের রয়েছে জাগতিক ও পারলৌকিক অনন্য বৈশিষ্ট্য।
ঈদের সামাজিক গুরুত্ব: আমাদের ঈদের দিন ধনী-দরিদ্র, রাজা-প্রজা, ফকির-মিসকিন নির্বিশেষে ঈদগাহ ময়দানে সারি সারি সমবেত হয়ে সর্বশক্তিমান আল্লাহর দরবারে মা প্রার্থনা করে, যা সামাজিক জীবনে দূর করে হিংসা-বিদ্বেস, ঘৃণা, উচু-নীচু ভেদাভেদ, হানাহানি, সাদা-কালোর ব্যাবধানসহ সামাজিব অবয়ের সকল উপাত্ত। প্রতিষ্ঠিত হয় ব্যাক্তিগত ও সামষ্টিগত আন্তরিকতা পূর্ণ ভালোবাষায় ভরপুর সামাজিক ব্যবস্থা। একমাস রোজা রাখার পর ঈদুল ফিতরের উৎসব মূলত: মুসলমানদের জন্য পুরস্কার ঘোষনার দিন। এ পুরস্কার পাওয়ার আশায় মুসলমানরা সাধারণত পারস্পরিক মোলাকাত, আত্মীয়-প্রতিবেশীদের মধ্যে দাওয়াতের প্রতিযোগীতা, বন্ধু-শত্র“দের বাড়িতে দাওয়াত খেতে যাওয়া, সাদাকাতুল ফিতর আদায়ের মাধ্যমে সামাজিক জীবনে বন্ধুত্বপূর্ণ রাখার উজ্জল দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করে।
ঈদুল ফিতরের অর্থনৈতিক গুরুত্ব: অতি সংেেপ ঈদুল ফিতরের অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পর্কে বলা যায় যে, ইসলাম নির্দিষ্ট সম্পদের মালিকদের কাছ থেকে সাদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব করে সমাজের অতি দীন-দরিদ্র, দূর্বল অংশের মানুষকে ঈদের এই মহা আনন্দে অংশীদার হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। যেহেতু এই দান বাধ্যতামূলক, তাই এর মাধ্যমে সামাজিক-অর্থনৈতিক সহযোগীতার হাত প্রসারিত করতে দরিদ্র-পতিত গরীব মানুষের প্রতি সহানুভূতির দাযিত্ববোধ জাগ্রত করে তোলে। বিনিময়ে দরিদ্র জনগোষ্টির মানবকূলকে পায় একটি দায়িত্বশীল, দয়াপরবশ জাতি হিসাবে। এ দানের মাধ্যমে ধনীদের মধ্যে যেমন হৃদয় শিথিল হয়, তেমনি গরীবদের মধ্যে ধনীদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ তৈরি হয়।
ঈদুল ফিতরের রাজনৈতিক গুরুত্ব: পবিত্র ঈদুল ফিতরের রয়েছে রাজনৈতিক ও আন্তর্জাাতিক গুরুত্ব। একটি দেশে বিভিন্ন ধরনের জনগোষ্টি বসবাস করে, চলমান থাকে বিভিন্ন মতবাদের রাজনৈতিক দল। এই পবিত্র ঈদকে সামনে রেখে শুরু হয় আন্তধর্মীয় মহা উৎসব। ইসলাম ধর্মকে পরিচয় করিয়ে দেয় অন্যান্য ধর্মলম্বিদের কাছে উদারতা, মান্তি ও বন্ধুত্বের এক অনন্য ধর্ম হিসাবে। দাওয়াত, মেহমানদারী, ঈদ কার্ড, ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় এর মাধ্যমে একটি পারস্পরিক সহানুভূতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হয়। একই ভাবে শত বিরোধিতা থাকা স্বত্তে¡ও রাজনৈতিক দলগুলো এই ঈদ উপল্েয চলে আসে খুব কাছাকাছি, অন্তরঙ্গ পরিবেশে, যা একটি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের জন্য শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান প্রতিষ্ঠা করতে সম। পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক ভাবে পারস্পরিক বৈরি রাষ্ট্রীয় সম্পর্কের অবষান ঘটানো সম্ভব হয়। তাইত আমরা দেখি মুসলিম-অমুসলিম রাষ্ট্রদূত, রাষ্ট্রপ্রধানদের ঈদের শুভেচ্ছা জানানো থেকে শুরু করে ঈদের এই মহা উৎসবে সাফল্য কামনা করতে। প্রমানিত হয় ইসলাম কোন ভৌগলিক সীমারেখায় আবদ্ধ কোন ধর্মের নাম নয়, বিশ্বনবী সা: এর প্রচারিত মহান ধর্ম, বিশ্ব মানবতার জন্য এক মহা সম্মিলন। ইসলামের প্রতিটি হুকুম, আহকাম, বিধি-বিধান আন্তর্জাতিক ও সার্বজনীনতায় ভরপুর। এজন্য জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ঈদকে সামনে রেখে বলেছেন-
শহীদী ঈদগাহে দেখো আজ জমায়েত ভারী
হবে দুনিয়াতে আবার, ইসলামী ফরমান জারি
তুরান-ইরান-হিজাজ-মেসের-হিন্দ-মরক্কো-ইরাক
হাতে হাত মিলিয়ে আজ দাঁড়িয়েছে সারি সারি
এই হলো পবিত্র ঈদের আন্তর্জাতিক সংপ্তি মর্মবাণী। পবিত্র ঈদুল ফিতরের এই মহা উৎসবে মুসলমানরা নিজেদেরকে উৎসর্গ করতে প্রতিযোগীতায় নেমে পড়ে। পরোপোকার, মা, উদারতার, সকলকে বুকে টেনে নেয়ার, ভেদাধেৎভদ ভূলে যাওয়ার এক মহা উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায়,
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ
তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে শোন আসমানী তাগিদ।
তোর সোনা-দানা বালাখানা সব রাহে লিল্লাহর
দে যাকাত মূর্দা মুসলিমে আজ ভাঙ্গাইতে নিদ।
তুই পড়বি ঈদের নামাজ রে মন সেই সে ঈদগাহে
যে ময়দানে সব গাজী মুসলিম হয়েছে শহীদ।
আজ ভূলে গিয়ে দোস্ত দুশমন হাত মিলাও হাতে
তোর প্রেম দিয়ে কর বিশ্ব নিখিল ইসলামী মুরিদ।
সারাবিশ্বে মুসলমান এক আল্লাহ, এক রিসালাত, আখিরাত, কোরআনের এবং এক বিশ্বনবী মুহাম্মদ সা: এর অনুসারী ও অনুগামী। এক আল।লাহর সন্তুষ্টি ও পুরস্কারের প্রত্যাশী, তারা সকলেই মহান রবের শাস্তি থেকে মুক্তির চেষ্টায় ব্যস্ত। সুতরাং, আমরা বুঝি গোটা বিশ্বের মুসলমানরা একমূখী ও একদেহ সরূপ। পবিত্র ঈদুল ফিতর ও মাহে রমজানের ইবাদৎ মুসলিম উম্মাহর এ একমূখীতা ও একদেহের বাস্তব প্রতিচ্ছবি।
পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, আমাদের শুধু মাহে রমজানের সিয়াম শেষে শুধু ঈদ উৎসব করা নয়, আমাদের এই অনুষ্ঠান থেকে মৌলিক শিা গ্রহণ করতে হবে। ঈদুল ফিতরকে মূলত রোজা ভঙ্গের খুশির দিন, এক মাস সিয়াম পালনের পুরস্কার ঘোষনার দিন হিসাবে নিতে হবে। মাসব্যাপি মহান আল্লাহর গোলামীতে থাকতে পারার জন্য শুকরিয়া আদায়ের দিন হিসাবে নিতে হবে। মাসব্যাপি সিয়াম সাধনার মাধ্যমে একজন মুসলমান যে সততা, ন্যায় পরায়ণতা, নিষ্ঠা, সত্যপ্রেম, খোদভীতির পরিচয় দিয়েছে সারা বছর সেটা তার জীবন কালের নিয়মিত কাজ হিসাবে মেনে চলা উচিৎ প্রতিটি কাজে। যে আল্লাহর নির্দেশে একজন রোজাদার রাতের শেষভাগে সাহারী করেন, দিনের আলো নেভার পর ইফতার করেন, গোপনেও কিছু পান করার সাহস পাননা, কোন প্রকার কামনা-বাসনা চরিতার্থ করেন না, যে মহান রবের ভয়ে নফসের দাষত্ব করেন না বিন্দুমাত্র বরং সকল েেত্র দাষত্ব মেনে চলেন একমাত্র আল্লাহ তায়ালার। পুরো একমাস ব্যাপি আত্ম সংযম, খোদা ভীতি, আনুগত্য, নিয়মানুবর্তীতা, সময়ানুবর্তীতার যে অনুশীলন ও প্রশিন গ্রহণ করে মাহে রমজানের শেষে ঈদুল ফিতর মাসব্যাপি প্রশিণ কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠান হিসাবে গ্রহণ করা উচিৎ।
আমরা যদি, এ প্রশিণ কোর্সের মহা সম্মিলনের উৎসবের এ শিাকে বাকী এগারোটি মাস দতার সাথে কাজে লাগাই, জীবনের সকল কাজ এ শিা অনুযায়ী পরিচালনা করি, তাহলেই মুসলিম জাতি হিসাবে আমরা ফিরে পেতে পারি আমাদের হারানো সম্মান ও গৌরব, নিশ্চিত হতে পারে আমাদের পরকালীন মুক্তি, ঠিকানা হতে পারে সুমহান জান্নাতের। আমরা কি পারিনা, ঈদুল ফিতরের আনন্দ, মাহে রমজানের শিা ও প্রশিনের ভিত্তিতে জীবন ও সমাজ পরিচালনার দীপ্ত শপথ নিতে? অঅমরা কি পারিনা, পবিত্র ঈদুল ফিতরের শিার ভিত্তিতে আমাদের ব্যাক্তি জীবন, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রিয় কাঠামো বিনির্মানের সিদ্ধান্ত নিতে? অবশ্যই পারতে হবে আমাদের। তখনই আমরা প্রতিষ্ঠিত হতে পারবো, মধ্যমপন্থি জাতি হিসাবে। মহান আল্লাহ আমাদের সহায় হউন।
লেখক
নির্বাহী সম্পাদক
মাসিক শিক্ষাঙ্গন