বৃহস্পতিবার, ১২ মে, ২০১১

মে ২০১১


সিভিল সার্ভিস আইন ও জনমুখী প্রশাসন হাসান ফেরদৌস



জনপ্রশাসনে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও দক্ষতা প্রদর্শনের উপযুক্ত পরিবেশ ও পরিস্থিতি সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকার সিভিল সার্ভিস আইন, ২০১০ প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেনসিভিল সার্ভিস আইনের মাধ্যমে সরকারি কর্মচারীদের দায়িত্ব, কর্তব্য ও অধিকার, নিয়োগ, পদোন্নতি, পদায়ন, প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা বৃদ্ধি, পদত্যাগ ও অবসর গ্রহণের বিধানসমূহ সন্নিবেশিত করা হয়েছেএছাড়াও সিভিল সার্ভিসের প্রত্যেক সদস্য আইনানুগভাবে প্রজাতন্ত্রের দায়িত্ব পালনকালে ক্ষতিগ্রস্ত হলে কিভাবে আইনের আশ্রয় লাভের অধিকারী হবেন, এ সম্পর্কেও উল্লেখ করা হয়েছে ইতিমধ্যে একটি খসড়া প্রণয়ন করে জনগণের অভিমত যাচাই শুরু হয়েছে, ওয়েবসাইটে প্রচার করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে পরামর্শ ও মতামত থাকলে সরাসরি বা ই-মেইলের মাধ্যমে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের ক্যারিয়ার প্যানিং অনুবিভাগের উপসচিবকে যেন অবহিত করা হয়
জনমত যাচাই করার এ জাতীয় উদ্যোগ প্রশংসনীয়, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং চিন্তা ও চেতনা থেকে উদ্বুদ্ধতথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়নের পথে অবশ্যই একটি মাইলফলকঅতীতে সরকারি বিধিবিধান কি হবে জনগণ তা জানবে অথবা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অবহিত হতে পারবে ভাবাই যেত নাপক্ষান্তরে এ জাতীয় কর্মকান্ড গোপনীয় সরকারি দলিল হিসেবে চিহ্নিত থাকাই ছিল নিয়মঅফিসিয়েল সিক্রেট অ্যাক্ট ১৯২৩-এর ধারক-বাহক বাংলাদেশকোন একটি পরিপত্র জারির আগে সংশ্লিষ্টরা জেনে যাওয়া হচ্ছে শৃংখলা ভঙ্গের শামিল, গোপনীয়তা সংরক্ষণের ব্যত্যয়
সিভিল সার্ভিস আইন প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছিল নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কার্যকালে, যখন প্রশাসনকে দুর্নীতিমুক্ত, গণমুখী ও যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে এ জাতীয় একটি আইন প্রবর্তনের কথা বারবার আলোচনায় আসেবিভিন্ন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সংঘটিত দুর্নীতি মামলার সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হলে বিষয়টি অধিকভাবে প্রণিধানযোগ্য হয়ে প্রতিভাত হয়রাজনৈতিক নৈতিকতা বিসর্জন বা পদস্খলনের সঙ্গে আমলাতন্ত্রকে সম্পৃক্ত করলে জনপ্রশাসন বিপর্যস্ত হতে পারে ভেবেই এ জাতীয় আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা জরুরিভাবে অনুভব করা হয়এছাড়াও জনপ্রশাসনে সংস্কার সাধন, ঔপনিবেশিক চিন্তাধারা থেকে উত্তরণ, লাল ফিতার দৌরাত্য থেকে জাতিকে মুক্ত করা হচ্ছে বর্তমান পদক্ষেপের মূল ভিত্তিলক্ষ্য হচ্ছে, জনগণ ও প্রশাসন মিলিতভাবে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় অংশগ্রহণ করবেসরকার সেবামূলক কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণ করবে এ জাতীয় ভাবধারা থেকে মুক্ত হয়ে উন্নয়ন সহযোগীর ভূমিকায় প্রশাসন যন্ত্র অবতীর্ণ হবে এবং তাই হবে একটি প্রগতিশীল রাষ্ট্রের দর্শনএকই সঙ্গে সুশীল সমাজের অভিপ্রায় ও প্রশাসনে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার উদ্যোক্তাদের আন্দোলনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সরকার বর্তমান আইন প্রণয়নের পথে যাত্রা শুরু করেছে
এ জাতীয় একটি জনগুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণের আগে জনপ্রতিনিধিদের অভিমত, জাতীয় সংসদে বিতর্ক, কর্মশালা ও ওয়েবসাইটে মতামত প্রদানে জনগণের সুযোগ সৃষ্টি হবে এতে কোন সন্দেহ নেইসুশীল সমাজ, বিদগ্ধ জনগণ ও বিশেষ অভিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ এবং সরকারি কর্মচারীরাও তাদের অভিমত প্রকাশ করতে পারবে অবাধে ও সুচিন্তিতভাবেলক্ষ্য হচ্ছে, একটি ভালো আইন প্রণীত হলে সব স্তরের জনগণ স্বস্তিবোধ করবে, তার সুফল পাবেগণতান্ত্রিক পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রশাসনের সব স্তরে সুশাসন প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেইজনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে জবাবদিহিমূলক প্রশাসন হচ্ছে দারিদ্র্য বিমোচনের প্রাথমিক শর্ত এবং একই সঙ্গে দুর্নীতিমুক্ত শক্তিশালী প্রশাসন হবে জাতীয় ও সমাজজীবনে সুবিচার প্রাপ্তির অন্যতম পদক্ষেপ
বাংলাদেশের সংবিধানের প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা আছে, ‘রাষ্ট্রের অন্যতম মূল লক্ষ্য হইবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এমন এক শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠাÑ যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হইবেএ লক্ষ্য অর্জন করতে হলে অবশ্যই দক্ষ, দুর্নীতিমুক্ত, প্রশিক্ষিত প্রশাসনের প্রয়োজন সর্বাধিকমূলত, এ চেতনাই প্রতিষ্ঠিত হতে হবে সিভিল সার্ভিস আইনের প্রতিটি অনুচ্ছেদেবাংলাদেশের সংবিধানের ১৩৩ থেকে ১৪০ অনুচ্ছেদে কর্মবিভাগ ও কর্মকমিশনের দায়দায়িত্ব সম্পর্কে উল্লেখ করা আছেসুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনে আরও বেশি কিছু সংযোজন করতে হবে বলে অনেকের ধারণাতবে খসড়া প্রস্তাবনায় বিষয়টি জোরালোভাবে আসেনি, প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হয়নি যৌক্তিকভাবেপক্ষান্তরে দুর্বল ভাষা প্রয়োগের ফলে ক্ষমতার অপপ্রয়োগ নিবারণের বার্তাই বিকশিত হয়েছে বারবার এবং আবশ্যিকতাশব্দটি সাধারণভাবে ব্যবহার না হলেও এখানে এসেছে কয়েকবার
সরকারের নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ ও সংসদীয় বিভাগÑ এই তিনটি অঙ্গের মধ্যে নির্বাহী বিভাগের সঙ্গে জনসাধারণের সম্পর্ক নিতান্তই নিবিড় ও অবিচ্ছেদ্যনির্বাহী বিভাগের কাছে সুবিচার পেলে বিচার বিভাগের দুয়ারে হাজির হতে হয় না অথবা স্থানীয় সংসদ সদস্যকেও সংসদে প্রশ্ন উত্থাপন করতে হয় নাতাই দক্ষ ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন দেশবাসীকে উপহার দেয়া যে কোন গণতান্ত্রিক ও জনপ্রিয় সরকারের মৌলিক দায়িত্ব এবং এর কোন বিকল্প নেইতাই দিন বদলের সরকার যে আইন প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তা অভিনন্দনযোগ্যসংস্থাপন বিভাগ থেকে যে খসড়া সিভিল সার্ভিস আইন, ২০১০ বর্তমানে ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে, এ সম্পর্কে কিছু আলোচনা করাই হবে প্রাসঙ্গিক
প্রথমত, শিরোনাম নিয়ে কিছু কথা বলা যেতে পারেসিভিল সার্ভেন্ট কথাটি ইংরেজি হলেও অনেকেই এর অর্থ বোঝেসংক্ষেপে বলা হয়, সরকারি কর্মচারী বা গণকর্মচারীমেধা ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে নিয়োগপ্রাপ্তরাই হচ্ছেন সরকারি কর্মচারীসামরিক বাহিনীর কর্মচারীরা সিভিল সার্ভেন্ট নয়কিন্তু সিভিল সার্ভিস আইনকথাটি কেমন যেন ইংরেজি বাংলার সংমিশ্রণে শ্রুতিমধুর নয়
এ আইনটিকে বাংলাদেশ গণকর্মচারী আইন, ২০১০ অথবা বাংলাদেশ জনপ্রশাসন আইন ২০১০ বলা যেতে পারেগণকর্মচারী বলতে কোন সংশয় থাকার কথা নয়গণকর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯ এবং গণকর্মচারী (অবসর গ্রহণ) আইন ১৯৭৪ এখনও বলব আছে এবং সবার জন্য প্রযোজ্যবাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসেস (পুনর্গঠন) আদেশ ১৯৮০-এর মধ্যে সার্ভিসসমূহের কথা আছেএখানেও কথাটি খেয়াল রাখার প্রয়োজন আছেবর্তমান খসড়ায় কারা সিভিল সার্ভিস নয় উল্লেখ করা হয়েছেতবে বিভিন্ন দেশে সিভিল সার্ভিসের ব্যাখ্যা ও পরিধি ভিন্নইংল্যান্ডে রানীর অধীনে নিয়োগপ্রাপ্তরাই হচ্ছে সিভিল সার্ভেন্ট, কাউন্টি বা সিটি কর্পোরেশনের নিয়োগপ্রাপ্তরা নয়কানাডাতে সিভিল সার্ভিসের পরিধি বিশাল, প্রায় ২০০ সরকারি দফতর ছাড়াও সব কাউন্সিল, কর্পোরেশন ইত্যাদিতে কর্মরত সবাই সিভিল সার্ভিসের আওতাভুক্তচীনের ইতিহাস প্রাচীনখ্রিস্টপূর্ব ২২১-২০৭ সালে কিন রাজবংশের আমল থেকেই আমলাতন্ত্রের সূচনা হয়পরবর্তীকালে হান, সুই, ট্যাং রাজবংশসমূহের আমলে এর প্রসার ঘটে এবং প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে প্রতিভাবানদের অনুপ্রবেশ ঘটে যার সুফল গণচীন পেয়েছে
ফ্রান্সে সরকারি ও কর্পোরেশনসমূহে কর্মরত সবাইকে সিভিল সার্ভেন্ট বলা হয়আমেরিকান যুক্তরাষ্ট্রে ১৮৭২ সাল থেকে সিভিল সার্ভিস প্রথা প্রচলিত আছেতবে ফেডারেল সিভিল সার্ভিসের পরিধি বিশালনির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ, সংসদীয় বিভাগসহ প্রায় সবাই সিভিল সার্ভেন্ট, তবে উর্দিপরা কর্মচারীরা এর বাইরেবাংলাদেশে দীর্ঘদিন থেকে সিভিল সার্ভিস বলতে ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তাদেরই বোঝায়পাকিস্তান আমলে সিভিল সার্ভিস বলতে সিএসপিদের প্রতিই দিকনির্দেশনা ছিলবর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ২৯টি ক্যাডার আছে, যার মধ্যে ১৫টি সাধারণ, ১৪টি টেকনিক্যালবিভিন্ন ক্যাডারের সংখ্যা হ্রাস করার একটি ভাবনা চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে এ সম্পর্কে কোন ধরনের ইঙ্গিত বর্তমান খসড়ার নেইন্যাশনাল সার্ভিস করার যে কথা সরকার ভাবছে, তার কোন দিকনির্দেশনা এখানে নেই
দ্বিতীয়ত, যে বিষয়টি তাক্ষণিকভাবে দৃষ্টিতে আসছে তা হচ্ছে সপ্তম অধ্যায়ে পদত্যাগ ও অবসর গ্রহণ সম্পর্কে২০ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘অবসর গ্রহণের বয়সসীমা হইবে ৫৮ বসরদীর্ঘদিন থেকে অবসর গ্রহণের বয়সসীমা ৬০ বছর করার দাবি উত্থাপিত হয়ে আসছেভারত, পাকিস্তান, নেপাল এবং শ্রীলংকায় অবসর গ্রহণের সময়সীমা ৬০ বছরবাংলাদেশে মানুষের গড় আয়ু এখন ৬৫ বছরসেখানে ৫৮ বছর করার অর্থ নেইমূলত এখনও অবসর প্রস্তুতিকালীন সময়সহ ৫৮ বছরই আছেঅথচ বিশ্ববিদ্যালয়, বিচার বিভাগ এবং বিআইডিএসসহ অনেক গবেষণা প্রতিষ্ঠানে অবসরের বয়সসীমা হচ্ছে ৬৫ বছরতাহলে এ আইন সরকারি কর্মচারীদের কর্মকাণ্ডের সুযোগ সম্প্রসারিত করতে পারেনি

তৃতীয়ত, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কোন সদস্যকে বাধ্যতামূলক অবসর, অপসারণ বা বরখাস্ত করা যাবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছেঅর্থা ২৫ বছর হলে অবসর প্রদানের যে হাতিয়ার প্রয়োগ করে অতীতে সরকারসমূহ পক্ষপাতিত্বের উদাহরণ সৃষ্টি করেছিল, তা করা সহজ হবে নাকিন্তু চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিধানের অবসান হবে, এ কথারও উল্লেখ নেইএকই সঙ্গে দলীয় চিন্তায় কাউকে বছরের পর বছর ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করে রাখা হবে এবং বেতনভাতা, যানবাহনসহ সব সুযোগ বিনা কাজে দেয়া হবে, এ জাতীয় কোন বিধান রহিত করার কথা উল্লেখ নেইচতুর্থত, সিভিল সার্ভিসের কাঠামো বিন্যাসে তিনটি স্তর করার প্রস্তাব করা হয়েছেসচিব ও অতিরিক্ত সচিবকে (প্রথম ও দ্বিতীয় স্তর) সুপিরিয়র স্তরে ধরা হয়েছেযুগ্মসচিবদের সিনিয়র স্তরে রাখা হয়েছেঅথচ অনেক মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত সচিবের পদ নেই এবং থাকলেও কার্যবণ্টনে তার ভূমিকা উলেখযোগ্য নয়পক্ষান্তরে কার্যপ্রণালী বিধিমালা ১৯৯৬ অনুসারে যুগ্মসচিবরা সিদ্ধান্ত দিতে পারেন এবং যুগ্মসচিবরাই সরাসরি সচিবের কাছে নথি পেশ করেন
একথা সত্য যে, জনপ্রশাসন এবং আমলাতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আমূল পরিবর্তন আনতে হবেনিরপেক্ষ, দক্ষ ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন জাতির অগ্রগতিতে অমূল্য অবদান রাখতে পারেএ বিষয়ে কোন ধরনের বিতর্কের অবকাশ নেইরাজনীতির ধামাধরা বা তোষামোদকারী কর্মকর্তারা গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ, সুষ্ঠু প্রশাসনের জন্য বিপজ্জনকএ বাস্তবতাকে দৃষ্টিতে রেখে সিভিল সার্ভিস আইনের পরিবর্তন ও সময়োপযোগী করার পদক্ষেপ গ্রহণ হবে একটি মাইলফলক

- সাংবাদিক ও কলামিষ্ট

অপরূপ সৌন্দর্য্যরে লীলাভূমি সিলেট =কামরুল ইসলাম



যখন আমি ৫ম শ্রেণীর ছাত্র তখন একদিন সন্ধ্যা বেলা মেঝ মামা বড় দুটি ব্যাগ হাতে করে বাসায় আসলেন   মা জিজ্ঞাসা করলেন কোথা থেকে আসলি? মামা বললো সিলেট গিয়েছিলাম এবং এরপর একের পর এক বলতে লাগলেন তার ৫ দিনের সিলেট  ভ্রমণের আশ্চর্যরকম গল্পমামা বললেন জাফলংয়ের পাথর বাচ্চা জন্ম দেয় এবং মাধবকুন্ডে ৮০ ফুট উপর থেকে শুকনো মাটির পাহাড় ফেটে পানি ধারা বয়ে নিচে নেমে আসেঠিক তখন থেকেই আমার মধ্যে প্রচন্ড রকম কৌতুহল জাগে কিভাবে পাথার বাচ্চা দেয় এবং মাটির পাহাড় থেকে পানি পড়ে
অবশেষে সেই ছোট বেলার সাধ অর্থা ১৩ বছরেরর জল্পনা, কল্পনা অবসান ঘটে ২০১১ সালের ১৬ মার্চপ্রথমেই কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি শিাঙ্গন পাঠক ফোরামকে, যে বৃহ সংগঠনটি না থাকলে হয়তোবা আমার পে কখনোই সিলেট যাওয়া হতো নাএকটি কথা না বললেই নয় যে শিাঙ্গন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অশিকাংশ শিক- শিকিা ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে
যাই হোক ১০ ই মার্চ সকাল বেলা ফোরামের সকল দায়িত্বশীলদের সাথে শিা সফরে যাবার যাবতীয় পরিকল্পনা ঠিক করে নিইআমাদের সফর ছিল ৩ দিনের ১৬-১৮ ই মার্চ পযর্ন্ততিন দিনের জন্য একটি সুপার বাসের সাথে সকল যোগাযোগ শেষ করে নিই১৬ তারিখ রাত ১২ টায় সদরঘাট থেকে আমাদের যাত্রা শুরু করলামআমাদের সফর সঙ্গী ছিলেন শিাঙ্গন সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি শাহীন আহমদ খান এবং অন্যতম সম্পাদনা নির্বাহী খন্দকার হাসিবুল ইসলামসফরের শুরুতেই আমাদের অঞ্চলের সেক্রেটারী মনোয়ার হোসেন আমার নাম ঘোষণা করেন সকল শিার্থীকে সফরের উদ্দেশ্য ও কর্মসূচী ঘোষণা করার জন্যতারপর শুরু হলো গান কৌতুক হাসি আরো কত কি? সবচেয়ে বেশি আনন্দ দিয়েছেন ওরা দুজন একজন আমারই সহোদর বি.বি.এ. পড়য়া জহির ও অন্যজন মুকিতএভাবেই রাতে আধরি পেরিয়ে চলে এলাম সিলেটের মৌলভীবাজারভোর বেলায় মৌলভীবাজারের একটি সুন্দর মসজিদে সবাই ফজরের নামাজ আদায় করিগাড়ির চাকা আবার ঘুরতে লাগলো হযরত শাহ্জালাল (র) ও শাহ্ পরাণের মাজারের উদ্দেশ্যঅল্পণের মধ্যেই পৌছে যাই ছোট বেলার সেই কাঙ্খিত স্বপ্নের ভুবন সিলেটেপ্রথমেই হযরত শাহজালাল এবং পরে শাহ পরাণ মাজারভিন্ন রকম এক অভিজ্ঞতা হলো সেখানেএক শ্রেণীর অর্থ লোভী মুখোশধারী মুসলমান কিভাবে মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে পুঁজি করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে ল ল টাকাযা এ দুটি মাজারে না গেলে হয়তোবা বুঝা যেতোনাঅতপর আমরা চললাম জাফলংয়ের উদ্দেশ্যেরাস্তার চারপাশে বিশালাকার উঁচু নিচু পাহাড় রাস্তাগুলো বয়ে চলছে আঁকাবাকাঁভাবেসত্যিই এক অপরূপ সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি সিলেটবার বার শিার্থীদের আল্লাহু আকবার বলে চিকার দিচ্ছিলপ্রকৃতির এই অপরূপ সৌন্দর্য্য উপভোগ করে  ২ ঘন্টা পথ পাড়ি দেবার পর আমরা জাফলং বাসস্ট্যান্ডে পৌছলাম সেখানে গোছল করবো বলে সবাই জামা কাপড় সাথে নিয়েছিলাম বিশাল আকৃতির এক রহস্যময় পাহাড়ের পাশ দিয়ে বয়ে চলে আঁকাবাঁকা পানি পথযে পানিতে পাথর বাচ্চা দেয়প্রতিনিয়ত সরকার এখান থেকে ল ল টন পাথর উত্তোলন করছেশুনেছি কেয়ামত পর্যন্ত দুনিয়ার মানুষ পাথর উত্তোলন করলেও সেখানে পাথর শেষ
হবে না  জাফলং নদীর পাশেই রয়েছে ভারতীয় সীনন্তস্ব-চোখে দেখে এলাম ভারতীয় বি.এস.এফ. নামক রক্তপিপাসু নর পিশাচদের যারা প্রতিনিয়তই আমাদের ভাই বোনদের রক্ত ও জীবন নিয়ে হলি খেলায় মেতে উঠেআমরা প্রায় ২ ঘন্টা যাবত সবাই সেখানে গোসল করলাম এবং অনেক মজা করলামজোহরের নামাজ এবং দুপুরের খাবার শেষে এবার যাত্রা শুরু চা বাগানের দিকে সিলেটের সবচেয়ে বড়- চা বাগান লাক্কাতুরা ন্যাশনাল টি গার্ডেনসেদিন আবার চা-বাগান বন্ধ ছিল তারপর আমার নানা ঐ চা বাগানের  এম.ডি. হওয়ার কারনে আর কোন বাধা রইল না ঘুরে বেড়াতে
সাত একর জমি নিয়ে তৈরি এ চা বাগান ঘুরতে কমপে দু দিনই লেগে যাবেআমাদের সময়ের সল্পতার জন্য সেই কাজটিই কিনা ২ ঘন্টার মধ্যে আশে পাশে ঘুরে দেখে শেষ করতে হলোনিকটবর্তী মসজিদ থেকে সবাই মাগরিবের নামাজ শেষ করে ৪ ঘন্টার পথ পাড়ি দিয়ে মাধবকুন্ডে পৌছলামরাতের খাবার শেষ করে এশার নামাজ পড়ে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়লামকারণ আগামীকাল অনেক জায়গা দেখার বাকীসে যাই হোক পরদিন ফজর নামাজের মাধ্যমে শুরু হলো দিনের ব্যস্ততাসকালের নাস্তা শেষে বেরিয়ে পড়লাম মাধবকুন্ডের উদ্দেশ্যেআমরা ৩টি গ্রপে বিভক্ত হয়ে মাধবকুন্ডের ভিতর প্রবেশ করলামকিছু পথ পাড়ি দেওয়ার পর চোখে পড়লো বিশাল আকৃতির এক পাহাড় যার মধ্য দিয়ে বেরিয়ে আসছে অপরূপ ঝরণাধারাসবশেষে বের হলাম শ্রীমঙ্গলের উদ্দেশ্যেআমরা জোহর নামাজ এবং আসরের নামাজ শেষ করলামশ্রীমঙ্গলের চা বাগানর আরো সুন্দর ও মনো মুগ্ধকর যা সত্যিই  বিষ্ময়করএখানেই সর্বপ্রথম ১৯৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় চা গবেষণা ইনিষ্টিটিউশনআমরা সেটাও পরিদর্শণ করলামবেলা যখন ৪ টা সাবর পেটে তখন েিধ আর পানির তৃষ্ণা তাই দেরি না করে বেরিয়ে পড়ি পথিমধ্যে দুপুরের খাবার শেষ করে আবার গাড়ির চাকা ঘুরতে লাগলো ঢাকার উদ্দেশ্যে
বর্ণিল ও বিত্রিময় এ মানব জীবনের প্রতিটি  মুহূর্তে রয়েছে শিাবিশেষ করে মুসলমানদের জন্য এ সময়টুকু সবচেয়ে বড় শিাভ্রমণ মানব জীবনকে জ্ঞানের ধারায় শাণিত করেব্যক্তি জীবনকে করে গতিশীল ও চটপটেনিজের জীবন হয়ে উঠে বাস্তব জ্ঞানের এক পূর্ণাঙ্গ ভান্ডার ভ্রমণের মাধ্যমেই স্রষ্টার প্রকৃত সৃষ্টি সর্ম্পকে জানা য়ায় মুসলিম বিশ্বের অন্যতম মহাকবি শেখ সাদী (রহ) ৯৯ বছর বয়সের মধ্যে ৩৩ বছর ভ্রমণ করেছিলেন  রাণী ভিক্টোরিয়া একবার বাংলাদেশে ভ্রমণ শেষে বরিশালকে বাংলার ভেনিসবলে আখ্যায়িত করে গেছেনবিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ পর্যটক  ইবনে বতুতাও বাংলাদেশ ভ্রমন করতে ভুলেননিজগ শ্রেষ্ঠ এই হাজার মাইল পাযে হেটে ভ্রমণ করেছেনতাই আসুন প্রিয় বন্ধুরা আমরা আমাদের জীবনকে পরিশুদ্ধ করার জন্য আমাদের যোগ্যতাকে সৃজীনশীল করার জন্য, সৃষ্টার প্রতি বিশ্বাসকে মজবুত এবং শক্তিশালী করার জন্য  সর্বোপরি সৃষ্টির অপরূপ এ রহস্যকে স্ব-চোখে অবলোকন করার মাধ্যমে মহান স্রষ্টার শোকর আদায় করি

মধ্যপ্রাচ্য সংকট ঃ তেল আশীর্বাদ না অভিশাপ = সম্রাট নূর


তেলের জন্য আজ বিশ্বব্যাপী উত্তাল হয়ে উঠেছেবিশেষ করে মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে তাকালে এটা প্রমাণিত হয়যে তেলের এতো গুরুত্ব সে তেলের তেলেসমাতিতে হাঙ্গামা শুরু হয়েছে গোটা বিশ্বেকোনো ভাবে যেন এটার সুষ্ঠ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়যার গায়ে একটু শক্তি বেশি সে যেন এটার মালিক হতে চানকারণ তাদের কাছে খুবিই স্পষ্টতেল সম্পদ নিজের দখলে থাকলে পৃথিবীকে নিজের মতো করে পরিচালনা করা যাবেতাই এ তেলের দখল নিতে বিভিন্নভাবে বিশ্ব জুড়ে চলছে ষড়যন্ত্র, হাঙ্গামা, দখলবাজি, লুটপাট ইত্যাদিবিশ্বের মধ্যে মুসলিম দেশগুলো হলো সবচেয়ে বেশি তেল সম্পদের মালিকএটা ইহুদি, খ্রীস্টানদের সহ্য হওয়ার কথা নয়যে কারনে তারা মুসলিম দেশ গুলোকে টার্গেট নিয়ে নীলনক্সা একে সে মোতাবেক কাজ করে চলেছেনিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য তারা যে কোন কাজ করতে পিছপা হবে নাপ্রয়োজনে রক্তের বন্যা বয়ে যাবেতার নজির আজ সবাই দেখতে পাচ্ছেইরাক, ইরান, সৌদিআরব, কুয়েক, কাতার, লিবিয়া, ইয়েমেন, সিরিয়া, মিশর, আবগানিস্তান, ফিলিস্তিন ইত্যাদি অসংখ্য দেশকে তারা আজ পুঙ্গ করে ছেড়েছেএতোও তারা ান্ত হয়নিদেশের তেল সম্পদ দখলের পর সে দেশের অস্তিত্বও রাখতে নারাজ এসব চক্রতাই যে তেল মানুষের জন্য কল্যাণকর সেই তেল কিনা আজ সবার মাঝে অভিশাপ হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে
সর্বশেষ মধ্যপ্রাচ্যে এ গণঅভ্যুত্থানের ঝড় লিবিয়ায় এসে কিছুটা প্রতিরোধের মুখে পড়েছিলকিন্তু জাতিসংঘের অনুমোদনের পর যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, কানাডা, ইতালি প্রভৃতি দেশ যে কোন সময় লিবিয়ার সেনা অভিযান  প্রেরণ করত পারেএই যুদ্ধ দামামার সাথে মহাদুর্যোগ  তেলের বাজারে যোগ করেছে নতুন মাত্রাজাপান বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তিকিন্তু সম্প্রতি দেশটিতে একের পর এক ভূমিকম্প আর সুনামীর কারনে সেখানকার ২০ হাজারের বেশি লোকের মৃত্যু ও পাঁচ লাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ায় তার প্রভাব পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতিতেওদেশটিতে জ্বালানি চাহিদা কমতে থাকায় ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কিছুটা কমে ১০০ ডলারে অবস্থান করছে২০০৮ সালে সর্বোচ্চ ছিল ১৪৭ ডলারতবে বিশ্বমন্দার পর কমতে থাকেকিন্তু লিবিয়া, ইয়েমেন, বাহরাইনসহ কয়েকটি দেশে দ্রুত রাজনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকায় তেলের দাম আবার ক্রমাগতভাবে বাড়বেতেলের দামের পারদ ওঠা-নামার সাথেই মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার সম্পর্ক ওতপ্রোতভাবে জড়িতফলে সহসা স্থিতিশীলতা আশা করা বৃথা
বাংলার প্রথিতযশা সাহিত্যিক হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর তৈলপ্রবন্ধের কথা অনেকেরই জানাএই প্রবন্ধে তেলের মাহাত্ম্য ও বহুরূপী ব্যবহার তুলে ধরা হয়েছে রস ঘন ভাষায়স্নেহ জাতীয় এই পদার্থটি বর্তমান বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করছেতেল মূলত দুপ্রকার, ভোজ্যতেল ও জ্বালানি তেলভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধিতে জনসমাজে কিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় তার জ্বলন্ত উদাহরণ বাংলাদেশএই তেল বহুলাংশে আমদানিনির্ভর বলে আমদানিকারকদের নিকট খোদ বাণিজ্যমন্ত্রীকেও অনেকসময় অসহায় মনে হয়েছেঅন্যদিকে জ্বালানি  তেল ছাড়া বর্তমান বিশ্ব সভ্যতাই অচললুইস ক্যাপিটাল মার্কেটস-এর এমডি ও গবেষণা প্রধান এডওয়ার্ড এল মোর্সেলের মতে, এই তেল আধুনিকতা ও বিশ্বায়নের প্রতীকশিল্পোন্নত দেশগুলোর তেল ছাড়া এক মুহূর্তও চলে নাজল, স্থল ও আকাশপথের মালামাল ও যাত্রী পরিবহন  তেল নির্ভরআবার শিল্পোপাদনেও তেল অপরিহার্যঅর্থা তেল ছাড়া গাড়ির চাকা ঘোরে না, এরোপ্লেনের পাখা ওড়ে না, কল-কারখানার উপাদন হুমকির মধ্যে পড়ে ইত্যাদিতেলের জন্য একবিংশ শতাব্দীর সূচনায় ইরাক যুদ্ধের কথা ভুলে যাওয়ার মত নয়উন্নত ও প্রভাবশালী দেশগুলো একদা বৈদেশিক ও শিল্পনীতিতে তেল অস্ত্রকে কাজে লাগাতকিন্তু তেল কোম্পানিগুলো মুক্তবাজারে আসার পর এখন নেপথ্যে নিয়ামক ভূমিকা পালন করছেওপেক বা তেল উপাদনকারী দেশগুলো বেসরকারিকরণের বদলে জাতীয়করণকে অগ্রাধিকার দেয়ায় বিরোধ তৈরি হয়েছেঅর্থনীতি, আজ রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে বিধায় তেল বিশ্ব-শাসকের আসনে সমাসীনএভাবে বিশ্ব দ্বন্ধ-সংঘাতের মূলেও গুটির চাল হিসেবে কাজ করছে এই শক্তিধর পদার্থটি
বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোতেই রাজনৈতিক অস্থিরতা বিদ্যমানতিউনিসিয়া ও মিসরের গণঅভ্যুত্থান প্রাথমিকভাবে সফলসেই উত্তাপের আঁচ লেগেছে এখন লিবিয়া, ইয়েমেন, আলজেরিয়া, জর্ডান, মরক্কো, বাহরাইন, সিরিয়া, ইরান এমনকি সৌদিআরবেও১৯৭১ সালেও তেলসমৃদ্ধ এসব দেশে এ ধরনের অস্থিতিশীলতা ও অরাজকতা ছিলচলমান সংকটের মূল কারণ হচ্ছে ব্যাপক বেকারত্ব, বড় ধরনের আয় বৈষম্য, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যসহ জীবনযাত্রার সার্বিক ব্যয় বৃদ্ধি, দীর্ঘদিনের অপশাসন, স্বৈরতন্ত্র, তেল আমদানিকারক দেশের স্বার্থ ইত্যাদিএসব প্রতিটি কারণের সাথেই তেল স¤পৃক্ত১৯৭১ সালে আরব বিশ্বের তেল উপাদনকারী দেশগুলো তেলভিত্তিক আন্তর্জাতিক মতার ভারসাম্য স্থাপনে চেষ্টা করেছিলনিজেদের মধ্যে এবং পশ্চিমা তেল  কোম্পানি ও ভোক্তাদের মাঝে ত্রিপীয় সমঝোতা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছিলসে সময় লিবিয়া, আলজেরিয়া, ইরাক ও সৌদিআরব ইউরোপে সরবরাহকৃত তেলের মূল্য নতুন করে নির্ধারণ করেফলে ইউরোপে রাতারাতি তেলের মূল্য ৩৫ ভাগ বেড়ে যায়একই সময় ওপেক (অরগানাইজেশন অব পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ) তেল কোম্পানির ওপর ৫০ থেকে ৮০ ভাগ ট্যাক্স বৃদ্ধি করেএ বছরই লিবিয়া ও আলজেরিয়া তেল সম্পদ জাতীয়করণের উদ্যোগ নেয়ফলে লিবিয়ায়  তেল উপাদনকারী কোম্পানি ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম (বিপি) ও আলজেরিয়ায় দায়িত্বরত ফ্রান্সের কোম্পানি সিএফপি তিগ্রস্ত হয়এ সময় যুক্তরাষ্ট্র তেল বাণিজ্যের েেত্র ব্রিটন উডস পদ্ধতি পরিত্যাগ করলে ডলারের অবমূল্যায়ন ঘটেঅর্থা ওপেক সদস্য রাষ্ট্রগুলো তেলের দাম বাড়িয়েও তির শিকার হয়এই প্রেেিত লিবিয়া তার তেল অস্ত্রকে পশ্চিমা বিশ্বের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে শুরু করেলিবিয়ার প্রেসিডেন্ট মুয়াম্মার গাদ্দাফি ১৯৬৯ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মতারোহণ করেনতিনি তখন থেকেই তেল উপাদন কমাতে শুরু করেন১৯৭০ সালে লিবিয়ায় যেখানে প্রতিদিন ৩.৩৫ মিলিয়ন ব্যারেল তেল উপাদিত হত, সেখানে ১৯৭২ সালে এসে দাঁড়ায় ২.২৫ মিলিয়ন ব্যারেল১৯৭৩ সালে কমতে কমতে তা ১.৬ মিলিয়ন ব্যারেলে পরিণত হয়আরব দেশগুলো তেলের মূল্য ও রাজস্ব বাড়াতে মরিয়া হয়ে ওঠেএভাবে তেল বাণিজ্যে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়একইসঙ্গে তৈরি হয় দ্বন্ধ-সংঘাতের পথওওপেক রাষ্ট্রগুলো একের পর এক তেলশিল্প জাতীয়করণের উদ্যোগ নিলে তেল কোম্পানিগুলো মধ্যপ্রাচের বাইরেও তেল সম্পদের দিকে নজর দিতে শুরু করেকিন্তু তেমন সুবিধে করতে না পারায় মধ্যপ্রাচ্যের তেল সম্পদের ওপর নির্ভরশীলতা বাড়তে থাকেতেলের মূল্য বিশ্বরাজনীতির কেন্দ্রমূলে চলে আসেতেলের দাম বাড়লে উপাদনকারী দেশ লাভবান হয়তিগ্রস্ত হয় ভোক্তা দেশ, আবার তেলের মূল্যহ্রাসে লাভবান হয় আমদানিকারক দেশ, তির শিকার হয় রফতানিকারক দেশ
যা হোক, দুই দশক ধরে তেলের মূল্য ছিল বাড়তির দিকেতবে ১৯৮১ ও ১৯৮৫ সালের মধ্যভাগে তেলের মূল্য ব্যারেল প্রতি ৩৫ ডলারের পরিবর্তে ১০ ডলারে নেমে আসে১৯৯০ সালে তা ২০ ডলারে এসে স্থিতিশীল হয়কিন্তু ১৯৯৮ সালে আবার ১০ ডলারে নেমে যায়এই তিন দশকে তেলসমৃদ্ধ দেশগুলোতে জনসংখ্যা বাড়তে থাকেশিশু জন্মের হার বৃদ্ধি পায়একইসঙ্গে বাড়ে জীবনযাপনের চাহিদাও কিন্তু একদিকে তেল রাজস্ব হ্রাস ও অন্যদিকে জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে মাথাপিছু আয় কমতে শুরু করেসরকারগুলো অর্থনীতির বহুমুখীকরণে ব্যর্থ হয়নতুন বিনিয়োগের পাশাপাশি সামাজিক খাতে ব্যয় বাড়ানো হয়নিলিবিয়া কোন অর্থনৈতিক সংস্কারের চেষ্টা করেনিএসব কারণে জনঅসন্তোষ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়পরবর্তীতে তেলের দাম বাড়লেও তা জীবন মানে সামঞ্জস্যহীনএভাবে আরব উপদ্বীপ ও পারস্য উপসাগরের সন্নিকটবর্তী যে সব এলাকা অত্যন্ত জনসমাকীর্ণ, সেখানে গণবিােভ আজ সহজেই সংক্রমিত হচ্ছেএই পরিস্থিতি তেল উপাদনেও প্রভাব ফেলছে
মিসর তেলের পাশাপাশি পরিমিত প্রাকৃতিক গ্যাসের রফতনিকারকসমুদ্রপথে জাহাজে করে ও পাইপলাইন দিয়ে প্রতিবেশী ইসরাইল, জর্ডান, সিরিয়া ও লেবাননে গ্যাস রফতানি করে থাকেকিন্তু গত ফেব্রয়ারি মাসে উত্তর সিনাই অঞ্চলের বেশিরভাগ পাইপলাইনে বিস্ফোরণ ঘটেএটা স্রেফ দুর্ঘটনা বা আন্দোলনকারীদের নাশকতাও হতে পারেতবে সুইজ ক্যানেল কোনভাবে তিগ্রস্ত হয়নিউল্লেখ্য, সুয়েজ খাল দিয়ে মোট তেল বিশ্ববাণিজ্যের ৯ ভাগ পরিচালিত হয়লিবিয়ায় চলমান গৃহযুদ্ধের কারণে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ৭ লাখ ব্যারেল তেলের বাণিজ্য তিগ্রস্ত হচ্ছেসৌদি আরব সেই তি পুষিয়ে দেবে বলে দাবি করছেকিন্তু লিবিয়া ও সৌদি আরবের তেল বিনিময়যোগ্য নয়লিবিয়ার অশোধিত তেলের গুণগত মান খুবই ভাললিবিয়ায় প্রতিদিন যে ১.৫ মিলিয়ন ব্যারেল তেল উপাদিত হয় তার বেশিরভাগই পরিচ্ছন্ন ও সবচেয়ে উন্নতমানেরএই তেলে সালফারের মাত্রা কমফলে সহজেই উচ্চ চাহিদাসম্পন্ন পেট্রোলিয়ামে পরিশোধিত করা যায়যা থেকে তৈরি হয় ডিজেলওপান্তরে, সৌদি তেল ভারী বলে সহজেই পরিশোধনযোগ্য নয়লিবিয়ার তেলের বাজার হচ্ছে ইতালি, ফ্রান্স, স্পেন, সুইজারল্যান্ড ও জার্মানিলিবিয়ার পাশাপাশি আলজেরিয়ার অশোধিত তেলেরও গুণগতমান সন্তোষজনকএই দুই দেশ প্রতিদিন যৌথভাবে প্রায় ২.৭ মিলিয়ন ব্যারেল তেল উপাদন করেপান্তরে, ইরান ও ইয়েমেন যৌথভাবে উপাদন করে ২.৪ মিলিয়নকিন্তু এসব দেশের রজনৈতিক অস্থিরতা তেল বাণিজ্যের জন্য হুমকিস্বরূপএদিকে গণবিােভ চলছে বাহরাইন ও ওমানেওফলে হরমুজ প্রণালী দিয়ে তেল সরবরাহ বিঘিœত হচ্ছেপ্রতিদিন ৩০টি বড় বড় ট্যাংকে বিশ্বের সমুদ্রবাহিত তেল বাণিজ্যের এক-তৃতীয়াংশ পরিচালিত হয় এই পথেএই রুট দিয়ে পরিবহনের মাধ্যমে এশিয়ার ৭৫ ভাগ তেল চাহিদা পূরণ করে
একদিকে এশিয়ার চীন, ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি দেশে তেলের চাহিদা বাড়ছেঅন্যদিকে আরব দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ বাজারেও তেলের চাহিদা ক্রমবর্ধমানআরব উপসাগরের দেশগুলোতে ২০০০ সালে প্রতিদিন তেলের চাহিদা ছিল ৪.৮ মিলিয়ন ব্যারেলতা গত বছর ২০১০ সালে ৭.৮ মিলিয়নে পরিণত হয়ফলে দীর্ঘমেয়াদে তেল আমদানীকারী শিল্পোন্নত দেশগুলো তিগ্রস্ত হওয়ার আশংকাই প্রবলআবার আরব সরকারগুলো নিজ দেশে সস্তায় ও ভর্তুকি দিয়ে জ্বালানি তেল সরবরাহ করছেতারা রাজনৈতিক কারণেই অভ্যন্তরীণ বাজারে তেলের দাম বাড়াতে পারছে নাএেেত্র ব্যতিক্রম শুধু ইরানযুক্তরাষ্ট্রের, নিষেধাজ্ঞার করণে তাতে মানিয়ে নিয়েছে অনেকেতবে কেবল তেলনির্ভর অর্থনীতি হওয়ার কারণেই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে নিকট ও অদূর ভবিষ্যতে আরও বিপদ অপো করছেঅর্থনীতি বহুমুখীকরণের অভাবে চলমন সংকটে সরকারগুলোর টিকে থাকার সম্ভাবনা ীণঅর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে কাঙ্খিত   পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে এসব দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসতে পারে

- সাংবাদিক

মানবাধিকার লংঘন প্রেতি বাংলাদেশ = শাইখ মাহদী


আপনি যদি আজকে সকালের খবরের কাগজটি পড়েন, নিশ্চয়ই চোখে পড়বে আমাদের নিজের দেশ এবং পৃথিবীর যে কোন দেশেই সরকারী বাহিনী কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘনের কোন একটি নিউজক্রসফায়ার থেকে শুরু করে গুয়ান্তানামো কারাগার - পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশেই এ ধরণের অত্যাচার একটি নৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছেআজকের আলোচনার শুরুতে সদ্য কারামুক্ত আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের কারাভোগের কাহিনী (আমার দেশ পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত) থেকে তাঁর ভাষাতেই দুটি ছোট ঘটনা উল্ল্যেখ করতে চাই
১. প্রথম গল্পটি একজন উঠতি মাস্তানের বড়ই হ্রস্ব জীবনের কাহিনীকলেজের গন্ডি পেরুবার পর চাকরী জোটেনি, বিন্তু প্রেম করে ঘরে বউ নিয়ে এসেছিল, এক পুত্র সন্তানের পিতাও হয়েছিলবড় মাস্তানদের ফুট-ফরমায়েশ খাটা আর ছোটখাটো অপরাধই ছিল তার আয়ের একমাত্র পথএকদিন আইন-শৃংখলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ায় অবধারিতভাবে তাকে যেতে হল রিমান্ডেসেখানে নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচার জন্য যে টাকা-পয়সার দরকার, তার সংস্থান দরিদ্র পরিবারটির ছিল নাশুরু হল মারপ্রথমে হাত, পা, বুট ব্যবহৃত হলএরপর লাঠি, সবশেষে দেশি ও বিদেশী নানা রকম যন্ত্রপাতিঅস্ত্রপাতির সন্ধানে চলা এ নির্যাতনের মাত্রা বাড়লো, এক সময় অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মারা গেল ছেলেটিতার স্থান হল নিখোঁজদের খাতায়মৃতদেহ গায়েব করে ফেলার বন্দোবস্ত সহজেই হয়ে গেলঝামেলা বাঁধালো অবুঝ স্ত্রীসে মনে করে, তার স্বামী এখনও বেঁচে আছেঅল্প বয়সী মেয়েটি কোলের বাচ্চাটিকে কাঁখে নিয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে কদিন পরপরই স্বামীর খোঁজে আসেস্বামীর বন্ধুদের কেউ কেউ এখনও জেলে আছেঅনেক কাঠখড় পুড়িয়ে সে তাদের সাথে দেখা করে পঞ্চগড়, নেত্রকোণা বা অন্য কোন জেলা কারাগারেস্বামী বন্দি হয়ে আছে এমন উড়ো খবর দিয়ে স্বামীকে খুঁজে দিতে অনুরোধ করেসেসব অচেনা জায়গায় নিজেই গিয়ে খোঁজ করবে কিনা, সেই পরামর্শও চায়পুলিশ হেফাজতে একসাথে বন্দী থাকা অবস্থায় যে বন্ধুটির সামনে হতভাগা, পথভ্রষ্ট সেই তরুণটি চিরতরে চোখ বুঁজেছিল, সে বন্ধুটির সাথে জেলে আমার দেখা হয়েছিলবন্ধুপতœীকে সত্য কথাটা বলবে নাকি, পরামর্শ চাইলে আমি কোন জবাব দিতে পারিনিচুপ করে সেই মাস্তান ছেলেটির অশ্রুভরা চোখের দিকে তাকিয়ে থেকেছি
২. দ্বিতীয় গল্পের মূল চরিত্র জেলের ভাষায় একজন টিটি - টপ টেররপ্রায় আট বছর জেলে থাকাকালে সহবন্দিদের কাছে অপরাধ জগত ছেড়ে দিয়ে বিদেশ চলে যাবার স্বপ্নের কথা বলেছে বহুবারনিজের অতীত কর্মকান্ড নিয়ে অহরহ অনুতাপ করতপথভ্রষ্ট ছেলেকে অন্ধকার জগ থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টায় সর্বস্ব বিক্রি করে বিদেশ পাঠানোর প্রস্তুতিও নিয়েছিলেন মধ্যবিত্ত পিতাছেলের জেল থেকে মুক্তি পাবার দিন উকন্ঠিত পিতা অপো করছিলেন জেল গেটের বাইরেছেলে জেল থেকে বেরুলেই তাকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফিরবেন, যেখানে প্রিয়জনেরা ব্যাকুল হয়ে অপোর প্রহর গুণছেতরুণটি জেল গেট থেকে বের হয়েই দেখলো, সাাত মৃত্যু ও পেতে বসে আছেভয়ার্ত কন্ঠে চিকার করে আবার জেল গেটের ভিতরে ফিরে আসার চেষ্টা করলততনে জেল গেটের দরজা বন্ধ হয়ে গেছেএলিট বাহিনীর সদস্যরা অপেমান দামী গাড়ি থেকে দ্রুত নেমে এসে শিকারের দুহাত ধরলপিতার চোখের সামনেই ঘটছে এই নাটকীয় দৃশ্যছেলেকে রা করার জন্য উদভ্রান্তের মত নিরাপত্তা রীদের কর্ডন ভেঙ্গে ছুটে আসার চেষ্টা করলেনএক ধাক্কায় তাকে ফেলে দেয়া হল রাস্তায়সদ্য কারামুক্ত টপ টেররকে ততনে টেনেহিঁচড়ে গাড়ীতে ওঠানো হয়েছেঅনেক কষ্টে বৃদ্ধ পিতা উঠে দাঁড়ালেন, চলন্ত গাড়ির পেছন পেছন দৌড়ানোর ব্যর্থ চেষ্টাও করলেনযন্ত্রের গতির কাছে স্বাভাবিকভাবেই মানুষের গতি পরাস্ত হলপরের দিনের সংবাদপত্রে সেই অতিপরিচিত গল্পসন্ত্রাসীদের সাথে আইনশৃংখলা বাহিনীর বন্দুকযুদ্ধে আরও একজন টপ টেরর নিহত, সংঘটিত স্থান  থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং কয়েক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে, ইত্যাদি ইত্যাদিপুত্রহারা পিতা অনেক সাহস করে সত্য ঘটনা জানানোর জন্য সংবাদ সম্মেলন করেছিলেনসেখানে কান্নারুদ্ধ কণ্ঠে প্রকৃত ঘটনা তুলেও ধরেছিলেনকিন্তু রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একাকী, মতাহীন নাগরিকের প্রতিবাদ অব্যাহত রাখা যায় নিপরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও একই পরিণতির হুমকিকে উপো করা সম্ভব হয়নিএক পুত্র গেলেও অন্য পুত্র, কন্যা, কন্যা জামাতারা তো রয়েছেতাদের প্রতিও তো পিতার কর্তব্য রয়েছে
মর্মস্পর্শী এ কাহিনীগুলো বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মানবাধিকার লংঘনের একটি চিত্র তুলে ধরেছেদিন আগেও র‌্যাবের গুলিতে লিমন নামক এক তরুণের পঙ্গুত্ব বরণ করা নিয়ে দেশে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিলইতিপূর্বে কমিশনার চৌধুরী আলমকে নিয়েও এ ধরণের আলোড়ন পড়ে গিয়েছিল, অজ্ঞাত পরিচয়ের গোয়েন্দা দিয়ে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া মানুষটির সন্ধান আজও মিলেনিএছাড়াও ভিন্ন মতাবলম্বী রাজনৈতিক দলগুলোকে দমন করতে ব্যবহৃত হচ্ছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও গোয়েন্দা বিভাগগোলাম মর্তুজা নামক একজন ছাত্রনেতা, মুফতী আমিনীর ছেলে সহ আরও অনেক ব্যক্তিকে সাদা পোশাকের গোয়েন্দা সদস্যরা গ্রেফতার করে নিয়ে যান, তাদের উপর চালানো হয় চরম নির্যাতনদীর্ঘ সময় পর কেউ কেউ মুক্তি পান, আবার কেউ চিরতরে হারিয়ে যানমূলত সার্বিক ভাবে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি এখন বিগত সময়ের চেয়ে অনেক ভয়াবহ পর্যায়ে রয়েছেএ থেকে বেরিয়ে আসতে প্রয়োজন সদিচ্ছা এবং দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন
বাংলাদেশ সংবিধানের তৃতীয় ভাগে ২৬ থেকে ৪৭ অনুচ্ছেদ পর্যন্ত নাগরিকদের মৌলিক অধিকরসমূহ সুবিন্যস্ত করা রয়েছে, কিন্তু বাস্তবে তার কতটুকু মানা হচ্ছে সে বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধঅনুচ্ছেদ ২৭ এ বলা হচ্ছে, আইনের দৃষ্টিতে সকলেই সমান এবং সকলেই আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারীঅনুচ্ছেদ ৩৩ এ বলা হচ্ছে, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে যথাসম্ভব শীঘ্র গ্রেপ্তারের কারণ না জানিয়ে প্রহরায় আটক রাখা যাবে নাঅনুচ্ছেদ ৩৫(৫) এ বলা হচ্ছে, কোন ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেয়া যাবে না কিংবা নিষ্ঠুর, অমানুষিক বা লাঞ্ছণাকর কোন দন্ড দেয়া যাবে না বা এ ধরণের কোন আচরণ করা যাবে নাএছাড়াও অনুচ্ছেদ ৩৯(২) এ প্রত্যেক নাগরিক এবং সংবাদ মাধ্যমগুলোর বাক স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছেসংবিধানের এ নীতিগুলোর বাস্তব প্রয়োগ এখন কতটুকু দেখা যাচ্ছে তা নিয়ে অনেকেই সন্দিহানবিনা কারণে, বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার করা, সরকার বিরোধী কোন বক্তব্য বা লেখনী প্রকাশ হলে তার লেখক/ প্রকাশক সম্পাদক সকলকে হয়রানি, রিমান্ডের নামে অমানবিক নির্যাতন আর বিচার-বহির্ভূত হত্যাকান্ড এখন আমাদের দেশে নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে
মানবাধিকার সংস্থা অধিকার সম্প্রতি প্রকাশ করেছে ২০১০ সালের মানবাধিকার রিপোর্ট, সেখানে ফুটে উঠেছে এক ভয়াবহ চিত্ররিপোর্টটির সারাংশ এখানে তুলে ধরা হল
অপরাধ  নির্যাতিত/ আহত   গ্রেপ্তারকৃত নিহত
রাজনৈতিক সহিংসতা ১৩,৯৯৯ ৩০১০   ২২০   
বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড     ৪৫     -      ১২৭   
সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার  ৩৮৪          ০৮    
সংবাদমাধ্যমের উপর নির্যাতন ১৭৮           ০৪    
শ্রমিকদের উপর নির্যাতন     ২৫৩৮   ২৫৯    ০৭    
নারী ও শিশু নির্যাতন      ৯৩৭           ২৭৫   
সীমান্তে নির্যাতন    ৮৩    -      ৭৫    
এছাড়াও অধিকারের রিপোর্টে বাংলাদেশের কারা ব্যবস্থা সম্পর্কে কিছু তথ্য দেয়া হয়েছে যা পিলে চমকে যাবার মত১২টি কেন্দ্রীয় কারাগার এবং ৫৫টি জেলা কারাগারের তথ্য উপাত্ত নিয়ে তৈরি করা প্রতিবেদনের সারসংপে -
  কারাগারের মোট ধারণ মতা- ২৯২৪০
    কারাগারে বর্তমানে অবস্থানরত হাজতী সংখ্যা- ৬৯০৫২
            পুরুষ হাজতি      নারী হাজতি
    বিচার শেষ, শাস্তি ভোগকারী আসামি সংখ্যা   ১৬৩২০  ৬৮০  
    বিচারাধীন আসামি সংখ্যা       ৪৮৯৬৮ ১৬০৮
    মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামি সংখ্যা     ১০২৯   ২৮    
    বিদেশী কারাবন্দী      ২১৮    ০৮    
    ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৪ ধারায় আটক     ১৬৭    -     
    বিশেষ মতা আইন, ১৯৭৪ অনুসারে আটক   ২৪     -
উপোরোক্ত রিপোর্টে যে বিষয়টি ফুটে উঠেছে তা হল, মানবাধিকার লংঘনের এক স্বর্গরাজ্যে পরিণত হতে চলেছে বাংলাদেশএতে দেখা যাচ্ছে যে, অপরাধী চক্র যেমন মানবাধিকার লংঘন করছে, তেমনি আইন শৃংখলা বাহিনীও কমে যাচ্ছে নাআবার, অপরাধীদের সংশোধনের জন্য যে কারা ব্যবস্থা, তাতেও হরহামেশা লংঘিত হচ্ছে মানবতা, গুরুতরভাবেসম্প্রতি কারামুক্ত মাহমুদুর রহমান বা কারান্তরাল থেকে বেরিয়ে আসা বিরোধীদলীয় নেতাদের কিছু কিছু বক্তব্য/ ঘটনায় এর অনেক প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছেসব মিলিয়ে, দেশের বর্তমান মানবাধিকার পরিস্থিতি চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে, এ থেকে বের হয়ে আসার পথ খুঁজে বেড়াচ্ছে
দেশের বিরাজমান মানবাধিকার পরিস্থিেিত উদ্বিগ্ন বহির্বিশ্বের দেশগুলোওআন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোও চোখ রাখছে বাংলাদেশের প্রতিকানাডিয়ান পার্লামেন্টের বিরোধী দলীয় হুইপ জাস্টিন ট্রোডো বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার লংঘন মেনে নেবে না কানাডাএছাড়াও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনও বাংলাদেশের মানবাধিকার লংঘন ও বিচার-বহির্ভূত হত্যাকান্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেহিউম্যান রাইটস ওয়াচ প্রকাশ করেছে ৭৬ পৃষ্ঠার একটি রিপোর্ট যাতে দেখানো হয়েছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কর্তৃক মানবাধিকার লংঘন এবং বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের নানা দিকএতে বলা হয়, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার ঐ সকল সদস্যকে কোন শাস্তির মুখোমুখি না করা হলে এ ধরণের হত্যাকান্ড চলতেই থাকবেঅতি সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে প্রকাশিত একটি মূল্যায়নে বলা হয়, বাংলাদেশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড, নির্যাতন, হয়রানিমূলক গ্রেফতার ঘটিয়েই চলেছেসেখানে একটি বিশেষ বাহিনীর নাম উল্ল্যেখ করা হয়এছাড়াও দেশের বিরাজমান সামগ্রিক মানবাধিকার পরিস্থিতিতে হতাশা ব্যক্ত করে যুক্তরাষ্ট্র সরকারতবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেন, “যেনতেন ভাবে এ রিপোর্ট তৈরী করা হয়েছে, এতে অনেক পুরোনো তথ্য ব্যবহৃত হয়েছেতবে  বিশিষ্ট শিাবিদ ও বুদ্ধিজীবি ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “যাদের হাতে মৌলিক মানবাধিকার রার দায়িত্ব, তাদের হাতেই মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে তবে সার্বিকভাবে এ বিষয়টি সবার কাছেই পরিস্কার, দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি চরম হুমকির মুখে রয়েছেআর এর দায়দায়িত্ব আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তথা সরকারের ওপরই বর্তায়

মূলত মানবাধিকার পরিস্থিতি হল একটি দেশের গণতান্ত্রিক সুস্বাস্থ্যের মাপকাঠিমানবাধিকার লংঘনের ঘটনা যত বাড়বে, জাতি হিসেবে আমাদের অসুস্থতাও তত বাড়বেএ থেকে বেরিয়ে আসার একমাত্র পথ সদিচ্ছাসরকারের  পরমতসহিষ্ণুতা আর বিরোধী দলের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ পারে আমাদের বর্তমান পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতেএর পাশাপাশি উদার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে সকল সমস্যার সমাধান করবার প্রচেষ্টা আমাদের দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতির পরিবর্তন আনতে সমআইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে জবাবদিহিতা এবং দায়িত্বের নির্দিষ্ট সীমারেখার মধ্যে নিয়ে আসা হলে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড চিরতরে হয়ে যাবে বলে আমাদের বিশ্বাসএতে সমুন্নত হবে মানবাধিকার, গণতন্ত্র পাবে পূর্ণতা

লেখক: ছাত্র, আইন বিভাগ, ঢা.বি.

২১ শতকের এজেন্ডা = আবুল আসাদ



অস্তায়মান বিশ শতকের উপসংহার থেকেই গড়ে উঠবে একুশ শতকের যাত্রাপথতাই এই উপসংহারের স্বরূপ সন্ধান খুবই জরুরীআমেরিকান এক লেখক তার এক শতাব্দী-সিরিজ গ্রন্থে শতাব্দীর গবমধ ঞবহফগুলোকে তার মত করে চিহ্নিত করেছেনএই গবমধ বহফগুলোর মধ্য রয়েছে ঃ
              বিশ্ব অর্থনীতি
              বিশ্ব রাজনীতি
              বিশ্ব সংস্কৃতি

এই গবমধ ঞবহফগুলো বিশ শতাব্দীর অনন্য কারিগরি, বৈষয়িক ও বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নতি এবং এই উন্নয়নের স্রোতে বহমান জাতিসংঘের অনন্য ভূমিকার দ্বারা প্রতিপালিত ও পরিচালিত হয়ে আগামী শতাব্দীর  সিংহদ্বারে এক বিশেষ রূপ নিয়ে হাজির হচ্ছেএই রূপের নির্ণয়ই একবিংশ শতাব্দীর প্রকৃতিকে পরিস্কার করে দিতে পারে
প্রথমে বিশ্ব অর্থনীতির শতাব্দী শেষের গতি-প্রকৃতির প্রশ্ন আসেআশির দশকের শুরু পর্যন্ত বিশ্ব দুই অর্থনীতি- পুঁজিবাদ ও কম্যুনিজমের সংঘাতে সংুব্ধ ছিলকিন্তু তারপর মুক্তবাজার অর্থনীতির অপ্রতিরোধ্য গ্রাসে সমাজবাদী অর্থনীতির পতন শুরু হলোআশির দশকের সমাপ্তিতে এসে তা সমাপ্তও হয়ে গেলআজ মুক্তবাজার অর্থনীতির গ্রাসে গোটা পৃথিবীমুক্ত বাজার অর্থনীতির মুল কথা হলো ঃ শক্তিমান অর্থনীতি বিজয় লাভ করবে, পরাজিত হবে দুর্বল অর্থনীতিএই পরাজয়ের ভয় দুর্বল অর্থনীতিকে সবল করে তুলবে এবং সেও উন্নীত হবে বিজয়ীর আসনেতাই সবাইকে মুক্ত বাজার অর্থনীতির স্রোতে নির্ভয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবেএই তত্ত্ব কথায় উল্লিখিত আইডিয়াল সিশুয়েশনহয়তো কোনদিন আসবে কিংবা আসবেই নাতবে তার আগেই শক্তিমান অর্থনীতির করাল গ্রাসে আত্মরার অধিকারহীন দুর্বল অর্থনীতি পরাধীন হয়ে মরার মত বেঁচে থাকার পর্যায়ে চলে যাবেযেমন আমাদের বাংলাদেশ মুক্ত বাজার অর্থনীতি গলাধঃকরণ করে ইতোমধ্যেই বিদেশী পণ্য বিশেষ করে ভারতীয় পণ্যের বাজারে পরিণত হয়েছেএই অবস্থায় বাজার না পাবার আশংকায় বিদেশী বিনিয়োগ এখানে আসবেনা বরং তা যাবে বাজার দখলকারী দেশের পুঁজিপতিদের কাছেযাওয়া শুরু হয়েছেযে বিদেশী বিনিয়োগ বাংলাদেশে আসার কথা ছিল তা গিয়ে বিনিয়োগ হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গেএর অন্যথা না ঘটলে অব্যাহত এই প্রবনতা বাংলাদেশকে শিল্প পণ্যের ক্রেতা এবং কৃষিপণ্যের বিক্রেতায় রূপান্তরিত করবে
বলা হচ্ছে, এই বিনাশ হতে বাঁচাতে এগিয়ে আসবে  ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন’ (ড.ঞ.ঙ)কিন্তু জাতিসংঘের মত এই সংস্থাও শক্তিমানদের দ্বারা পরিচালিত এবং শক্তিমান অর্থনীতিরই স্বার্থ পুরা করবেশুধু তাই নয়, এই সংস্থা মুক্তবাজার বাণিজ্যের বিশ্বনিয়ন্ত্রক হিসেবে আত্মরায় উদ্বুদ্ধ দুর্বল অর্থনীতির বেয়াড়াপনাকে শায়েস্তা করার জন্য বাণিজ্য অবরোধ আরোপ করতে পারবে হয়তো মহানমুক্তবাজার অর্থনীতির মূল্যবান স্বার্থেই
মুক্তবাজার অর্থনীতির এই বিশ্বরূপ বিশ্বে একক অর্থনীতি গড়ার লইেযার নিয়ন্ত্রনে থাকবে আজকের শক্তিমান অর্থনীতিগুলো, আর শোষিত হবে অনুন্নত ও উন্নয়নমুখী অর্থনীতির দেশসমূহআজকের বিশ্ব অর্থনীতির শতাব্দী শেষের এটাই প্রবণতা
এই প্রবণতা তার লে পৌঁছতে পারলে, একক এক বিশ্ব অর্থনীতি গড়া এবং তাকে এককেন্দ্রীক নিয়ন্ত্রনে আনার প্রয়াস সফল হলে বিশ্বের মানুষের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জীবনে তার অশুভ প্রভাব নেমে আসবে
অনুন্নত ও উন্নয়নমুখী মুসলিম অর্থনীতিগুলোর জন্য এটা একবিংশ শতাব্দীর প্রথম চ্যালেঞ্জ
বিশ শতকের দ্বিতীয় গবমধ ঞবহফহিসেবে আসে বিশ্ব রাজনীতির কথা
ইসরাইলের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ডেভিড বেনগুরিয়ান একটা বিশ্ব রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেছিলেনযার নেতৃত্ব দেবে ইহুদিরা এবং যার রাজধানী হবে জেরুজালেমতার স্বপ্নের ভবিষ্য আমি জানি না, তবে এক বিশ্ব অর্থনীতির মতই এক বিশ্ব রাষ্ট্র গড়ার ধীর ও ছদ্মবেশী প্রয়াস চলছেএই প্রয়াসে ছাতা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে জাতিসংঘ এবং অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে গণতন্ত্রগণতন্ত্র জয় করেছে যেমন কম্যুনিষ্ট সাম্রাজ্য, তেমনি জয় করবে গোটা বিশ্ববিশেষ সংজ্ঞায়িত এ গণতন্ত্রের আদর্শের কাছে জাতীয় স্বার্থ ও জাতীয় অধিকারকে বলি দিতে বলা হচ্ছেবলি না দিলে শক্তি প্রয়াগেরও ব্যবস্থা রয়েছেগণতন্ত্রের স্বার্থ রার জন্যই হাইতিতে আন্তর্জাতিক বাহিনী নামানো হয়েছে জাতিসংঘের নেতৃত্বেএমন হাইতি ভবিষ্যতে আরও অনেক হতে পারে
গণতন্ত্র কিন্তু সমস্যা নয়, সমস্যা হলো গণতন্ত্রের অর্থ ও রক্তস্রোতের উপর তাদের বর্তমান যে রাষ্ট্রসংহতি গড়ে তুলেছে, সে রক্তস্রোত প্রবাহিত না হলে এবং সে সময় গণতন্ত্রের নীতি অনুসৃত হলে তাদের এই রাষ্ট্রসংহতি গড়ে উঠতো নাএমনকি রেড ইন্ডিয়ানদেরও একাধিক রাষ্ট্র সৃষ্টি হতোএই ইতিহাস তারা ভুলে গেছেযেমন আমাদের প্রতি এখন তাদের নসীহত, বিদ্রোহী শান্তি বাহিনীর গায়ে আমাদের হাত দেয়া যাবে নাতথাকথিত আদিবাসি বলে তাদের মাটিতে আমাদের পা দেয়া যাবেনাদেশের ভিতর কোন গ্রপ বা কোন ব্যক্তি যদি বিদেশী টাকার পুতুল সেজে ঐতিহ্য ও মূল্যবোধকে গলা টিপে মারতে চায়, তাহলেও গণতন্ত্রের আদর্শের স্বার্থে তাদের জামাই আদর দিয়ে যেতে হবে
গণতন্ত্রের দায়িত্বহীন এই আদর্শ অনুন্নত ও উন্নয়নমুখী এবং সমস্যা  পীড়িত দেশ ও জাতিকে দ্বন্দ্ব-সংঘাতে ত-বিত এমনকি খন্ড-বিখন্ড করতে পারেঅন্তত আর কিছু না হোক বহু মত ও পথে  বিভক্ত এবং দুর্বলতো করবেইএ ধরনের দেশ ও জাতিকে তাদের স্বকীয় আদর্শ ও মূল্যবোধ থেকে অনায়াসেই সরিয়ে আনা যায় এবং তাদের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির উপর বিদেশী নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা সহজ হয়
এর সাথে যুক্ত হয়েছে এনজিও প্রভাবএরা নামে নন-গভর্নমেন্টাল অর্গানাইজেশনহলেও এদের সরকারি ভূমিকা ক্রমবর্ধমান হয়ে উঠেছেএখনি এরা সরকারি বাজেটের একটা অংশ পাচ্ছেনিকট ভবিষ্যতে এরা সরকারের গোটা সার্ভিস ও উন্নয়ন সেক্টর পরিচালনার অধিকার পেয়ে যাচ্ছে  তখন আইন শৃংখলা ও দেশ রা ছাড়া সরকারের হাতে আর কিছুই থাকবে নাজাতিসংঘের অনুসৃত নীতি রাষ্ট্রসমুহের দেশ রা ব্যবস্থাকে সংকুচিত অথবা বিলোপ করে দিতে পারেজাতিসংঘ শান্তি রার কাজ অনেক আগেই শুরু করেছে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার কাজেও হাত দিয়েছেঅতএব জাতিসংঘ নিরাপত্তার গ্যারান্টি দিয়ে সংগত কারণেই রাষ্ট্রসমুহকে দেশ রা বাহিনী খাতে খরচ বন্ধ করতে বলতে পারেসুতরাং সরকারের কাজ তখন হয়ে দাঁড়াবে শুধু শান্তি-শৃংখলা রা করা এবং সরকারের এই কাজও নিয়ন্ত্রিত হবে এনজিওদের দ্বারাকারণ এনজিওরা গোটা সার্ভিস ও উন্নয়ন সেক্টরের মালিক হওয়ার ফলে দেশের রাজনীতি তারাই নিয়ন্ত্রন করবেআর এনজিওরা, সবাই জানেন, আর্থিক ও আদর্শগত দিক থেকে মূলত জাতিসংঘ অথবা জাতিসংঘের পরিচালক শক্তিসমুহের আজ্ঞাবহএ অবস্থায় রাষ্ট্রসমুহ কার্যতই জাতিসংঘ নামের এককেন্দ্রীক এক শক্তির অধীনে চলে যাবে
রাষ্ট্রের অন্যতম নিয়ামক হলো জাতীয়তাবোধএই জাতীয়তাবোধ বিলোপ অথবা দুর্বল করারও একটা প্রচেষ্টা বিশ্বব্যাপী চলছেজাতিসংঘ তার উন্নয়ন, সেবা ও শান্তি প্রতিষ্ঠামুলক এজেন্সী সমুহের মাধ্যমে একটা আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোন গড়ে তুলছে এবং পারস্পরিক নির্ভরতার এক অপরিহার্য অবস্থা সৃষ্টি করছেএ অবস্থা জাতীয় চিন্তাকে ধীরে ধীরে পেছনে ঠেলে দিবে এবং আন্তর্জাতিক বিবেচনাকে বড় করে তুলবেজাতিসংঘের পিছনে নাটের গুরুযারা, তাদের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য এই শূন্য জাতীয়বোধঅবস্থা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন
এভাবেই পৃথিবীর আজকের শক্তিমানরা জাতিসংঘের ছায়ায় দাড়িয়ে জাতিসংঘকে নতুন এক বিশ্বরূপ দিতে চাচ্ছেজাতিসংঘের জননন্দিত সেক্রেটারি জেনারেল দাগ হ্যামার শোল্ড বলেছিলেন, জাতিসংঘকে হতে হবে বিশ্ব সংস্থা’, ‘বিশ্ব সরকারনয়সে হবে উন্নয়ন ও শান্তির সহায়তাকারীকোনক্রমেই জাতিসমুহের রাজনৈতিক , অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কোন সিস্টেমের ডিক্টেশনকারী নয়কিন্তু জাতিসংঘকে আজ রাষ্ট্রসমুহকে দুর্বল ও নিয়ন্ত্রিত করার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছেবিশ্বের দুর্বল জাতি সমুহের মত মুসলমানদেরকেও একবিংশ শতকের এই জটিল রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে
বিশ্বে এক অর্থনীতি ও এক রাজনীতির মত গোটা বিশ্বকে এক সংস্কৃতির অধীনে আনারও দুর্দান্ত প্রয়াস চলছেএই লে দুনিয়ার মানুষের জন্য একক এক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ কাজ করছেতারা চাচ্ছে গোটা দুনিয়ার জন্য মুল্যবোধের একক একটি সনদ  নির্ধারণ করতেএই মানদন্ডের নাম দেয়া হচ্ছে সেক্যুলার হিউম্যানিজমজাতিসংঘের এ সংক্রান্ত দলিল দস্তাবেজে এই তত্ত্ব দাঁড় করানো হচ্ছে যে, মানবাধিকার সকলের উর্ধ্বেজাতীয় ধর্ম, জাতীয় সংস্কৃতি, জাতীয় ঐতিহ্য ইত্যাদি অধিকার সবই এর অধীনএই অধিকারগুলো ততটুকুই ভোগ করা যাবে, যতটুকু মানবাধিকারঅনুমতি দেয়জাতিসংঘের এক দলিলে এভাবে বলা হয়েছে, সাংস্কৃতিক জীবন ও পরিচয়ের বিকাশসহ সাংস্কৃতিক অধিকার প্রতিটি ব্যক্তির জন্যেই স্বীকৃতকিন্তু এই সাংস্কৃতিক অধিকারকে সীমাহীন করা যাবে নাযখনই তা মানুষের অধিকারের উপর হস্তপে করে তখনই সাংস্কৃতিক অধিকার অচল হয়ে পড়েএর পরিস্কার অর্থ এই যে, সাংস্কৃতিক অধিকার মানুষের মৌল স্বাধীনতা ও অধিকার খর্ব করার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। (টহরঃবফ ঘধঃরড়হ ইধপশমড়ঁহফ ঘড়ঃব-নু উরধহধ অুঃবহ ঝযবহশব) এই দৃষ্টিভঙ্গিই জাতিসংঘের নাইরোবী সম্মেলন, কায়রোর  জনসংখ্যা ও উন্নয়ন সম্মেলন, কোপেন হেগেনের সামাজিক শীর্ষ সম্মেলন, বেইজিং এর বিশ্ব নারী সম্মেলন ইত্যাদির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হয়েছে এবং আরও হবেউদ্বেগের বিষয় এসব সম্মেলনে সুকৌশলে প্রণীত ধর্মনিরপে মানবতাবাদ (ঝবপঁষধ ঐঁসধহরংস) প্রতিষ্ঠার দলিলে অধিকাংশ মুসলিম দেশও দস্তখত করেছেঅথচ জাতিসংঘ প্রচারিত ধর্মনিরপে মতবাদএর তত্ত্ব মেনে নিলে ইসলামকে কেটে ছোট বিকলাঙ্গ করে মসজিদে পুরে রাখতে হবেতাদের বলা উচিত ছিল, তথাকথিত সার্বজনীন মানবাধিকার আইন নিশ্চিত ভাবেই মানব জীবন, তার স্বাধীনতা ও নিরাপত্তার ঐতিহ্য সংরনকে বিপর্যস্ত ও বিপন্ন করে তুলতে পারেইসলামের আদর্শ ও  সংস্কৃতির মাধ্যমে কার্যকরভাবে যদি মানব মর্যাদার প্রতিষ্ঠা হয়, সেটাই হয় সত্যিকারের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠাকিন্তু এই কথা কেউ আমরা বলিনি
এভাবে অন্য কেউও বলছে না, অন্য জাতি, অন্য ধর্মও নয়তার ফলে, ‘ধর্মনিরপে মানবতাবাদ’-ই বিশ্ব সংস্কৃতির একমাত্র মানদণ্ড  হয়ে দাঁড়াচ্ছেঅন্য কথায় এটাই হয়ে দাঁড়াচ্ছে বিশ্ব সংস্কৃতি
এর ফল হবে অত্যন্ত ভয়াবহআমরা আমাদের ধর্ম পালন করতে পারবো নাউত্তরাধিকার আইনকে বলা হবে মানবাধিকার বিরোধী, শাস্তির আইন অভিহিত হবে বর্বর বলে, পর্দাকে বলা হবে মানবাধিকারের খেলাপ, কুরবানিকে বলা হবে অপচয় ইত্যাদিএমনকি ইসলামের দাওয়াতকে নিষিদ্ধ করা হবে মানবাধিকারের পরিপন্থি বলেসবচেয়ে বড় কথা হলো, কোথাও জাতীয় আদর্শ ভিত্তিক রাষ্ট্রগঠিত হলে তাকে অভিহিত করা হবে মানবাধিকার বিরোধী সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবেসেকুলার হিউম্যানিজমপ্রকৃত পে সূদুরপ্রসারী একটা ষড়যন্ত্রএর ল্য মানুষকে তার অল্েয তার ধর্ম থেকে সরিয়ে নেয়ামানুষের ধর্ম না থাকলে তার জাতীয়তা ধ্বসে পড়বেজাতীয়তা ধ্বসে পড়লে তার রাষ্ট্রও ধ্বসে পড়বেএটাই চাচ্ছে আজকের ছদ্মবেশ নিয়ে দাঁড়ানো বিশ্বনিয়ন্ত্রকরা
বিশ্বে ধর্মসমুহকে বিশেষ করে ইসলামকে ধর্ম ও সংস্কৃতি বিরোধী এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে একবিংশ শতকে
বিশেষ করে ইসলামকেই এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবেকারণ, অন্য ধর্মগুলোর কোনটিই মানুষের পুর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা হিসেবে কার্যকরী নয়সুতরাং তারা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করবে না, করতে চাইলেও তারা পারবে নাকিন্তু ইসলাম পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধানশুধু ইসলামই তাদের চ্যালেঞ্জ করে টিকে থাকতে পারেইসলামের শত্ররাও এ কথা বলছেঞযব ঊহফ ঐরংঃড়ু- এর লেখক ফ্রান্সিস ফকুয়ামা কম্যুনিজমের ধ্বংসস্তুপের উপর দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ‘পাশ্চাত্য ও পাশ্চাত্য চিন্তা ধারার বিজয় প্রমান করছে যে, পশ্চিমা উদারনৈতিক মতবাদের প্রতিদ্বন্দ্বী সব ব্যবস্থাই আজ খতম হয়ে গেছেকিন্তু তিনি আবার বলেছেন, তবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা একটা হবে ধর্মের সাথে আসছে একবিংশ শতাব্দীতে এবং তাঁর মতে সে ধর্ম ইসলাম
সুতরাং একবিংশ শতাব্দীর রাজনীতি, অর্থনীতি এবং সংস্কৃতি যে চ্যালেঞ্জ নিয়ে হাজির হচ্ছে একবিংশ শতাব্দীতে, মানবতার সামনে, তার মোকাবিলা ইসলামকেই করতে হবে
আর এ দায়িত্ব বিশ্বের মুসলমানদেরআনন্দের বিষয়, এ দায়িত্ব পালনের জন্য জাতীয় জীবনে যে রেনেসাঁর প্রয়োজন সে রেনেসাঁ আজ সৃষ্টি হয়েছে মুসলিম বিশ্বেরেনেসাঁর নিশানবর্দার সংগঠনেরও সৃষ্টি হয়েছে মুসলিম দেশে দেশেক্রমবর্ধমান হারে তরুনদের সম্পৃক্ততায় এ সংগঠনগুলো বিকশিত হয়ে উঠছেত্যাগ ও কোরবানীর েেত্রও রেনেসাঁ-কাফেলার নিশান বর্দাররা পিছিয়ে নেইআজ গোটা দুনিয়ায় আদর্শের জন্য ও আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন দিচ্ছে একমাত্র মুসলমানরাই
তবে প্রয়োজনের তুলনায় এবং চ্যালেঞ্জের নিরিখে এটুকু যথেষ্ট নয়এসব কাজকে আরও সংহত ও শক্তিশালী করার জন্য মৌল কিছু বিষয়ে মুসলিম তরুনদের নিজেদেরকে যোগ্য করে গড়ে তোলা প্রয়োজনমৌল এই বিষয়কে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায় :
নিজেদের জীবন ব্যবস্থা ও তার ইতিবৃত্ত সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞানার্জন, কোরআন-হাদীস এবং মহানবীর জীবন সম্পর্কেতো অবশ্যই, ইসলামের আইন ও ঐতিহ্য সম্পর্কে ও সম্যক জ্ঞানার্জন করতে হবে
ইসলামী শিার আলোকে প্রতিটি মুসলিম তরুনকে তার চারপাশে যা আছে, যা ঘটছে তার প্রতি তীè নিরীনী দৃষ্টি রাখার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে-  রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক সব বিষয়ই এ নিরীনের েেত্র তাদের মনে রাখতে হবে, দৃষ্টি-মনোহারীতা নয় সত্যই আসল কথাআজ আমরা এমন এক সময়ে বাস করছি যখন প্রচারণা জোরে খুব সহজেই মিথ্যাকে সত্য প্রতিপন্ন করা হচ্ছেএই অবস্থায় গ্রহন বা বর্জনের েেত্র ইসলামী নীতিবোধ সামনে রেখে অনুসন্ধান, অধ্যয়ন ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে হবে
তীব্র সাংস্কৃতিক সংঘাতের এই যুগে মুসলিম তরুনদেরকে নিজেদের সাংস্কৃতিক নীতিবোধ ও পরিচয়কে ভালোভাবে হৃদয়ঙ্গম করতে হবেআর্ট-আর্কিটেকচার থেকে শুরু করে জীবন চর্চার সকল েেত্র ইসলামের চিন্তা ও দর্শনকে ভালোভাবে বুঝে নিতে হবে এবং বুঝতে হবে ইসলামের সাথে অন্য সংস্কৃতিগুলোর মৌল পার্থক্য সমূহএই পর্যালোচনার জ্ঞান তাদেরকে নিজেদের এবং অন্যদের অবস্থানকে বুঝতে সাহায্য করবে এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সমর্থ্য করে তুলবে
মুসলমানদের বিজ্ঞানের যে পতাকা ৯শ বছর আগে অবনমিত হয়েছিলো এবং সাড়ে ৬শ বছর আগে ভূলুন্ঠিত হয়েছে, সেই পতাকার গর্বিত শির আবার উর্ধ্বে তুলে ধরার জন্য মুসলিম তরুনদের এগিয়ে আসতে হবে
ইসলাম সকল যুগের সর্বাধুনিক মতবাদএ মতবাদকে যুগপূর্ব অচল ভাষা বা কৌশল নয়, যুগশ্রেষ্ঠ ভাষায় যুগোত্তর ল্য সামনে রেখে উপস্থাপন করতে হবে  শুধু তাহলেই এই আদর্শ যুগ-চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সকল মানুষের ঘরে গিয়ে পৌঁছতে পারবে
এই করণীয় কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারলে মুসলিম তরুনরা যে জ্ঞান ও সাংস্কৃতিক শক্তিতে সজ্জিত হবে তা একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য অবশ্যই প্রয়োজন
একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মূলতই সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিকএই চ্যালেঞ্জর মধ্যে অবশ্যই অর্থনীতি, রাজনীতি ও সমরশক্তির মত দিকগুলো আছেতবে এগুলোর অর্জন, অধিকার, ব্যবহার, কার্যকারিতা- সবকিছুই বুদ্ধির শক্তির উপর নির্ভরশীলকম্যুনিজম রার সব অস্ত্র সব অর্থ সোভিয়েত ভান্ডারে থাকার পরও বৈরী জ্ঞান ও সংস্কৃতির সয়লাবে যেমন তা শেষ হয়ে গেছে, তেমনি, ‘সেক্যুলার হিউম্যানিজমএবং আগ্রাসী পুঁজি ও আধিপত্য রার গণতন্ত্রতার ভান্ডারে সব অস্ত্র, সব অর্থ রেখেই শেষ হয়ে যেতে পারে, প্রয়োজন শুধু ইসলামের মহান মানবতাবাদী জ্ঞান ও সংস্কৃতির আধুনিকতম মানের প্রচন্ড এক সয়লাব