শুক্রবার, ৩ জুন, ২০১১

ইতিহাস

তখন থেকে এখন
রিয়াদ হোসাইন রায়হান


প্রতিটি সৃজনশীল কর্মকান্ডই আগামীর বার্তা বাহক। জ্ঞান অন্বেষণ, জ্ঞানের রাজ্যে বিচরণ এ সবই যে কোন সৃজনশীল পরিকল্পনায় নতুন মাত্রা যোগ করে। যদি কোন পরিকল্পনার বিষয়বস্তু হয় উন্নত নৈতিকতাবোধ তৈরী তবে তা হয় একটি উত্তম পরিকল্পনা। যদি কোন পরিকল্পনার ল্য উদ্দেশ্য হয় আদর্শ জাতি গঠন তা হয় একটি মহতী উদ্যোগ। এই ধরনের একটি পরিকল্পনার স্বার্থক বাস্তবায়নই জন্ম দেয় সুনাগরিকের। ঠিক এমনই একটি পরিকল্পনার স্বার্থক রূপায়ন ঘটে ২০০৮ সালের ৬ জুন শ্রদ্ধাভাজন নিজামুল হক নাঈম ভাইয়ের হাত ধরে। দেশ যখন একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছিল, জাতি হিসেবে আমরা যখন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে দিনাতিপাত করছিলাম, বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া ছাত্র হিসেবে সেদিন নাঈম ভাই স্বপ্ন দেখেছিলেন একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া তারই অগ্রজ-অনুজ ছাত্র-ছাত্রীরা যখন তাদের প্রকৃত দায়িত্ববোধ ভুলে গিয়ে চরম হতাশার মধ্যে দিনাতিপাত করছিল তখন নাঈম ভাই চিন্তা করেছিলেন কিভাবে তাদের বিবেকের দরজায় কড়াঘাত করা যায়। সময়টি ছিল ২০০৭ সালের শেষের দিকে। আমরা সংখ্যায় ছিলাম মাত্র ১৮ জন। তিনি সেদিন এ বিষয়ে আমাদের শুধুমাত্র ধারণা দিয়েছিলেন। তথাপি এর ব্যাপকতা আমরা খুব কমই অনুধাবন করতে পেরেছিলাম। কিন্তু স্বপ্ন প্রয়াসী মানুষ কি হাল ছাড়ে কখনও ! সে জানে কিভাবে বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে স্বীয় ল্েয উপনীত হওয়া যায়। হাল ছাড়েননি নাঈম ভাইও। একজন উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি শুধু একটি দিক-দর্শনের জন্মই দেননি বরং দিয়েছিলেন এর একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ। অবশেষে সকল বাঁধা পেরিয়ে ২০০৮ সালের ৬ জুন জন্ম হল জাতির প্রতিনিধিত্বকারী মাসিক পত্রিকা ‘শিাঙ্গন’। জাতির একটি দূর্যোগময় মুহুর্তে শিাঙ্গনের জন্ম সেদিন প্রমাণ করেছিল এদেশের তরুন সমাজ কত দ এবং কত নির্ভীক। সেদিন ছাত্র-শিক, বুদ্ধিজীবি ও সূধী মহলে ব্যাপক প্রশংসা কুড়াতে সম হয় শিাঙ্গন। আরো দ্বিগুন উৎসাহে চলতে থাকে তার সাহসী পথ চলা। এই পত্রিকায় একজন ব্যক্তি অথবা শিার্থী শুধু তার স্বাধীন মতামতই তুলে ধরে না বরং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করে কান্ডারীর ভূমিকা পালন করে। এই শিাঙ্গনের মাধ্যমে একজন শিার্থী শুধু তার মেধা বিকাশের সুযোগই পায় না বরং মেটাতে পারে তার জ্ঞানের খোরাক। এই পত্রিকার মাধ্যমে একজন শিক যেমন প্রয়োজনীয় নির্দেশনা শিার্থীদের আঙ্গিনায় সরাসরি পৌছাতে পারেন, ঠিক তেমনি একজন বুদ্ধিজীবি তার মতামত-দর্শন পৌছাতে পারেন সরকারের কাছে। বহুবিধ চাহিদার বাস্তব অনুরণন এই শিাঙ্গন। এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি নিজামুল হক নাঈম ভাই এর প্রতি তাই আজ হৃদয়ের সবটুকু শ্রদ্ধা প্রকাশ না করে পারছি না। নাঈম ভাইয়ের পর মু. মাকসুদুর রহমান ও মাসুদুল ইসলাম বুলবুল এই পত্রিকাকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। এখন এই পত্রিকার কান্ডারীর ভূমিকায় আছেন শ্রদ্ধেয় শাহীন আহমদ খাঁন ভাই। বলতে দ্বিধা নেই, শিাঙ্গনের নিয়মিত পথ চলা কখনই মসৃন ছিল না। কখনও আর্থিক সংকট আবার কখনও বা স্থায়ী অফিসের অভাব এর চলার পথকে বাঁধাগ্রস্থ করতে চেয়েছে। কিন্তু শিাঙ্গন পরিবারের আন্তরিক প্রয়াস, শিার্থীদের মাঝে এর ব্যাপক চাহিদা, শুভানুধ্যায়ীদের নিয়মিত পরামর্শ সকল বাঁধাকে দূর করতে সম হয়েছে। একে একে তিন বছর পার করে আজ চতুর্থ বর্ষে পা রাখল, সেদিনের সেই শিশু পত্রিকাটি। শিাঙ্গনের অনেক কাজই এখনো অসমাপ্ত। মেধা ও নৈতিকতার সমন্বয়ে শিাঙ্গন ভাবী সভ্যতার প্রতিটি ইট বিনির্মাণ করতে চায়। শিা ও সংস্কতির শিল্পকে ঐতিহ্যের আলোকে ঢালাই করে শিাঙ্গন গড়ে তুলতে চায় সভ্যতার মিনার। বিশ্বাসী হৃদয়ের অন্ত:কর্ণে কড়াঘাত হেনে শিাঙ্গন গড়ে তুলতে চায় মানবতার শক্ত ভিত। স্বাধীনতার চৈতন্যে লালিত হয়ে শিাঙ্গন ফেলতে চায় তার সাহসী পদপে। কুসংস্কার আর জড়তার সকল বন্ধন ছিন্ন করে শিাঙ্গন হতে চায় মানবতার দিশারী। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার ল্েয সততা ও দেশপ্রেমের অঙ্গীকারবদ্ধ শিাঙ্গনের এই অন্তহীন পথ চলা হয়তো একদিন আন্দোলিত করবে ছাপান্ন হাজার বর্গমাইলের এই প্রশস্থ জনপদকে।


লেখক ঃ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক
মাসিক শিাঙ্গন

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন