ষড়যন্ত্রের কবলে পাকিস্তান ক্রিকেট
মোঃ মফিজুর রহমান
দেশটির নাম পাকিস্তান, রাজনীতি, যুদ্ধ-সংঘাত, যেন তাদের নিত্য দিনের সঙ্গী। এবারের রাজনীতি কোন দেশের বিপে নয়, নিজের দেশের ক্রিকেট টিমেরউপর। তাইতো অধিনায়ক থেকে বলি দিতে হলো পাকিস্তানের তারকা অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদিকে। যার নেতৃত্বে পাকিস্তান গত বিশ্বকাপে সেমিফাইনালেরমুখ দেখেছিল। সেই আফ্রিদিকেই এবার নেতৃত্ব থেকে সরিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। ২০১১ সালের বিশ্বকাপে পাকিস্তান সেমিফাইনাল খেলে শহীদ আফ্রিদিরঅধীনে। সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজেও ৩-২ ম্যাচে সিরিজ জয়ে নেতৃত্ব দেন এ অলরাউন্ডার। তাই আফ্রিদিকে ব্যর্থ অধিনায়ক মনে করার কোনো কারণ নেই।ইতোমধ্যে আয়ারল্যান্ড সফরের জন্য দল ঘোষনার সময়ও কোন কারণ জানাননি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান ইজাজ বাট। আয়ারল্যান্ডসিরিজে দুই ম্যাচে পাকিস্তানকে নেতৃত্ব দেবেন মিসবাহ। আফ্রিদি সে দলে সাধারণ খেলোয়াড় হিসেবে থাকবে।
জানা যায়, ওয়েস্ট ইন্ডিজে ওয়ানডের পালা চুকিয়ে দেশে ফিরেই টিম ম্যানেজমেন্টের সমালোচনা করেছিলেন আফ্রিদি। বিশেষ করে কোচ ওয়াকার ইউনুসেরদিকে সমালোচনার তীর ছুড়েছিল্নে তিনি। দেশে ফিরেই আফ্রিদি বলেছিলেন সবারই নিজের কাজ করা উচিত। জবাবদিহিতাও জরুরী। কোচের সঙ্গে সম্পর্কপ্রসঙ্গে জানতে চাইলে সে সময় আফ্রিদির মন্তব্য ছিল সম্পর্কটা এমন জায়গায় চলে যায়নি যে তা আর জোড়া লাগানো যাবে না। ধারণা করা হয়, তারইপ্রেেিত ওয়ানডের অধিনায়কত্ব হারাতে হলো আফ্রিদিকে। যদিও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের মুখপাত্র এ সন্দেহ এড়িয়ে গেছেন কূটনৈতিক ব্যাখ্যা দিয়ে, প্রতিসিরিজে অধিনায়ক ঘোষণা করে পিসিবি। এটাও সে রকমই। এদিকে ২৮ এবং ৩০ মে আয়ারল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় দুটি ওয়ানডের জন্য ১৬ সদস্যের পাকিস্তান দলেআরেকটি চমক সাবেক অধিনায়ক ইউনুস খানের অন্তর্ভুক্তি। যাঁকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপে ওয়ানডে সিরিজে উপযুক্তই মনে করেননি পিসিবি।
টি-২০ বিশ্বকাপ সিলেটে ঃ
২০১৪ সালে বাংলাদেশ এককভাবে আয়োজন করবে টি-২০ বিশ্বকাপ ক্রিকেট। সময়সূচী এখনও তৈরি হয়নি। যেহেতু বাংলাদেশ এককভাবে আয়োজন করতেযাচ্ছে তাই অনেক ভেন্যুর প্রয়োজন। কারণ এখানে অনেকগুলো ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে তাছাড়া অনুশীলন ম্যাচতো থাকবেই। কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডেরহাতে রয়েছে মিরপুর, ফতুল্লা, বগুড়া, খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্টেডিয়াম। এ ক’টি স্টেডিয়াম দিয়ে ম্যাচ পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়বে তাই বিসিবি হন্যহয়ে ভেন্যু খুঁজছে। বিসিবি মনে করে এই অল্প সময়ে অন্তত ১টি স্টেডিয়াম হলেও খেলা চালিয়ে নিতে পারবে। আয়োজকদের মনে অনেক স্থানের নাম এসেছেশেষ পর্যন্ত সিলেট চুড়ান্ত হয়। ২০১১ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের আয়োজন সুন্দর হওয়ায় আইসিসি ২০১৪ সালের টি-২০ বিশ্বকাপের আয়োজন করারঅনুমতি দেয়। বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য স্বাগতিক বাংলাদেশের হাতে সময় আছে আরো ৩ বছর। এ সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশকে সব আয়োজন সম্পন্ন করতে হবে। যে কারনে এনএসসি ও বিসিবি যৌথভাবে কাজে হাত দিতে প্রাথমিক পরিকল্পনা প্রনয়ন শেষ করে এখন বাজেট প্রস্তাব পেশ করতে যাচ্ছে। বিসিবি কক্সবাজার ভেন্যুর জন্য পরামর্শ দিলেও সরকারি নির্দেশে সিলেটে নতুন স্টেডিয়াম তৈরির বাজেট পেশ করা হবে। ২০১৪ সালের আগেই স্টেডিয়াম সম্পন্ন করাইএনএসসির ল্য। তাইতো আগামী অর্থবছরে বাজেটে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) সিলেট স্টেডিয়ামের ব্যাপারে অনুমোদন দেবে বলে জানা যায়। এখনথেকেই স্টেডিয়ামের কাজ শুরু না করলে সময়মত কাজ শেষ করা সম্ভব নাও হতে পারে। কারণ সিলেটে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন স্টেডিয়ামের কোনোঅবকাঠামোই বর্তমানে নেই। এছাড়া বগুড়া ও খুলনা স্টেডিয়ামে খানিকটা সংস্কারের কাজ করতে হবে এনএসসিকে। তবে এটা এখনই জরুরী নয়।
বিসিবির আরেকটি সূত্র থেকে জানা গেছে, বিশ্বকাপ টি-২০ উপল্েয সিলেট নগরীকে ঢেলে সাজাতে সরকারিভাবে সিলেট সিটি করপোরেশনকে বিশাল বাজেটদেয়া হবে। অতীতে সিলেট নগরীতে আন্তর্জাতিক মানের কোনো টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়নি। যার ফলে নতুন করে রাস্তা তৈরি ও সংস্কার আর বিদেশী অতিথিদেরআবাসন ব্যবস্থা করতে পাঁচ তারকা হোটেল তৈরি করতে হবে। এসব কার্যক্রম সফল করতে বিশাল অর্থের প্রয়োজন। নতুন করে রাস্তা তৈরি করতে সরকারিবাজেট দেয়া হবে। কিন্তু হোটেল তৈরির েেত্র বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গুলোকে আগ্রহী করতে সরকার বিশেষ পদপে গ্রহন করতে হবে। সিলেট নগরী ছাড়াওজাফলং, জৈনা পাহাড় ও তামাবিলের পর্যটন এলাকাগুলো বিশ্বের কাছে পরিচিত করার জন্য টি-২০ বিশ্বকাপকেই উপল্য হিসেবে বেছে নিয়েছে বিসিবি।বিশ্বকাপের জন্য যে পরিমান অবকাঠামো ও সুবিধার প্রয়োজন হয়, তার বিন্দুমাত্রও নেই সিলেটে। তাই বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত। তাড়াহুড়া করতে গেলেপুরো টাকাটাই পানিতে যাবে।
এসএলপিএলের সঙ্গে আফ্রিদির ৩ বছরের চুক্তি
অবশেষে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) অংশগ্রহণ করতে না পারার আপে ঘুচতে চলেছে পাকিস্তানী ক্রিকেটারদের। চলতি বছরের জুলাই-আগস্টেশ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বিশ্বের দ্বিতীয় দামী টুয়েন্টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট আসর শ্রীলঙ্কা প্রিমিয়ার লীগে (এসএলপিএল) খেলার প্রস্তাব পেয়েছেন পাকিস্তানেরবেশ কয়েকজন ক্রিকেট তারকা। আর পাকিস্তানের ওয়ানডে দলের অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি ইতিমধ্যেই ৩ বছরের চুক্তিতে স্বার করে পেয়ে গেছেন একটি দলেরঅধিনায়কত্ব করবার সুযোগ।
২০০৮ সালের প্রথম আইপিএলে পাকিস্তানের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার অংশগ্রহণ করেছিলেন। ওই তালিকায় ওয়ানডে দলের বর্তমান অধিনায়ক শহীদআফ্রিদি, শোয়েব আখতার ও আব্দুর রাজ্জাকসহ পাকিস্তানের বেশ কয়েকজন ক্রিকেট তারকা ছিলেন। কিন্তু ওই বছরের শেষের দিকে মুম্বাইয়ে পাকিস্তানী জঙ্গিদেরহামলায় ১৬৪ জন নিহত হলে দুদেশের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্কের পাশাপাশি ক্রিকেট সম্পর্কেও ফাটল ধরে। এরপরে আর আইপিএল পরিচালনা পর্ষদ তাদেরআসরের খেলাতে নিলামেই তোলেনি পাকিস্তানী কোনো ক্রিকেটারকে। ফলে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় ও অর্থনৈতিক মানদন্ডে ক্রিকেটারদের জন্য সবচেয়ে লোভনীয় ওইআসরে খেলা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তারা। তবে এবার তাদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে ধরা দিয়েছে প্রস্তাবিত শ্রীলঙ্কা প্রিমিয়ার লীগ (এসএলপিএল)। প্রথম আসরেইবেশ কয়েকজন পাকিস্তানী ক্রিকেটার অংশ নেবেন ওই আসরে। আর শহীদ আফ্রিদি পেয়ে যাচ্ছেন একটি দলের নেতৃত্বভার। এজন্য ইতিমধ্যে এসএলপিএর পথেকে তাকে প্রস্তাবও দেয়া হয়েছে। প্রথম আসরের জন্য তার সঙ্গে ৩৫ হাজার মার্কিন ডলারের ৩ বছর মেয়াদী চুক্তিও সম্পাদন করেছে এসএলপিএল কর্তৃপ।তবে আইপিএলের তুলনায় অর্থের পরিমাণ কম হলেও ২০১২ সালের দ্বিতীয় আসরে তা বেড়ে দ্বিগুণ হবে বলে শ্রীলঙ্কার এক সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে। আরঅর্থের চেয়ে সম্মানটাকেই বিশাল একটি পাওয়া বলে মনে করছেন আফ্রিদি। উচ্ছ্বসিত আফ্রিদি জানিয়েছেন, এটি পাকিস্তান ক্রিকেটারদের জন্য একটি বিরাটসুযোগ। এর মাধ্যমে আবারও বাইরের কোনো বড় আসরে খেলার মাধ্যমে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করার সুযোগ পাবেন তারা।
এসএলপিএল কর্তৃপরে কাছ থেকে আফ্রিদির পাশাপাশি ইতিমধ্যে প্রস্তাব পেয়েছেন দলের টেস্ট অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হক, শোয়েব আখতার, আব্দুর রাজ্জাক, উমর গুল ও ওমর আকমল।
উল্লেখ্য, ৭টি দল নিয়ে চলতি বছরের জুলাই-আগস্টে এসএলপিএলের প্রথম আসর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
রোনালদোর মূল্য ১৫০ মিলিয়ন পাউন্ড ঃ
ফুটবলের জনপ্রিয় কাব রিয়াল মাদ্রিদ ক্রিশ্চিয়ানো রোনলদোকে অস্বাভাবিক মূল্যে ছেড়ে দেয়ার প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছে। আর এজন্য তারা ১৫০ মিলিয়ন পাউন্ডদাবি করছে। তবে রিয়ালের প্রেসিডেন্ট ফোরেন্টিনো পেরেজ এ জন্য চড়া দরের কোনো বিনিময় প্রস্তাব শুনতে ইচ্ছুক। ২০০৯ সালে স্প্যানিশ কাব রিয়াল রেকর্ড৮০ মিলিয়ন পাউন্ডে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে রোনালদোকে কিনেছিল। ওই সময় পেরেজ ঘোষণা দিয়েছিলেন রোনালদোকে দিয়ে সমর্থকদের প্রত্যাশাপুরোপুরি উসুল করা হবে। আর যথাসময়ে এই সেরা খেলোয়াড়কে অন্য দলের কাছে ছেড়ে দিয়ে উপযুক্ত লাভ আদায় করবে তার দল।
রোনালদো বার্সেলোনার কাছ থেকে পাওয়া প্রস্তাবে সাড়া দেয়ার ব্যাপারে রিয়ালের মতামতের অপোয় ছিলেন। বিশ্বের অনেক বড় বড় কাবই তাকে নিজেদেরদলে নিতে চুক্তি স্বার করতে আগ্রহী। কিন্তু রোনালদোর জন্য রিয়ালের হাঁকা এ অস্বাভাবিক পারিশ্রমিকের কারণে কাবগুলো এখন অনেকটা আগ্রহ হারাচ্ছে বলাযায়। বর্তমানে তিনি রিয়ালে সাপ্তাহিক ২ লাখ পাউন্ডের চেয়ে কিছু বেশি বেতনে রয়েছেন। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস লিগে দলের কোচ হোসে মরিনহোর সঙ্গে তারমতানৈক্যের কারণে এখন তাকে ছেড়ে দিতে চায় রিয়াল। দলের ক্রীড়া-কৌশল বিষয়ে চির প্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার সঙ্গে সেমি ফাইনাল ম্যাচে বিবাদেজড়িয়েছিলেন তারা। তবে এই পর্তুগিজ তারকা চলতি বছর সবকটি প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সর্বোচ্চ ৫১টি গোল করেছেন। কাজেই তাকে পেতে হুমড়ি খেয়েইপড়বে বিশ্বের নামিদামি কাবগুলো। এখন দেখার বিষয় কত মূল্যে কোন কাব তাকে নিজেদের জার্সি পরাতে আগ্রহী?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন