শুক্রবার, ৩ জুন, ২০১১

প্রবাসীর কলম থেকে...


প্রবাসীর কলম থেকে....
মো: নাজমুল আলম
শিক ৩ঘন্টা ধরে কাশ নিচ্ছেন। লেকচারের সাথে সাথে প্রোজেক্টরের মাধ্যমে বিভিন্ন স্লাইড এবং অন্যান্য তথ্য দিচ্ছেন। আর ছাত্র-ছ্ত্রাীরা প্রত্যেকেই মনযোগদিয়েই লেকচার শুনছে। লেকচার শোনার ফাঁকে ফাঁকেই কেউ কফি কেউ চকলেট খাচ্ছে অথবা কেউ নাস্তা সেরে নিচ্ছে আর শিক তার লেকচার চালিয়ে যাচ্ছেন।অবাক করার মত বিষয়ই বটে। আমরা শুধু কাশরুমে শিকের লেকচার শুনেই অভ্যস্থ, কিন্তু কাশ চলাকালীন সময়ে যে নাস্তাও করা যায় তা প্রথম চাুষকরলাম। এই চিত্রটি ইউরোপের প্রথম সারির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের।
সেমিস্টারের শুরুতেই আমাদের কাছে প্রিন্টেড কাশ সিডিউল  দিয়ে দেয়া হল। আগামী মাস কখন কোথায় কাশ কোন শিক কাশ নিবেন, কবে কোথায়  ঊীপঁংংরড়হ, অ্যাসাইনমেন্ট জমা অত:পর ঊীধস থেকে শুরু করে  বংবহঃধঃরড়হ, ঈড়সঢ়ঁঃধষধনবুকিং পরীার স্থান সব বিস্তারিতভাবে দেয়াথাকে সেখানে।
 প্রথম দিন মাসের সিডিউল হাতে পেয়ে ভেবেছিলাম  এত নিখ্্্ুঁত টাইম টেবিল ম্যানেজ করা হয়তো সম্ভব হবে না। কারণ আমাদের প্রতিদিন কাশশুরু হত সকাল .১৫মিনিটে। আর শীতকাল শুরু হওয়াতে সূর্য উঠবে সকাল .৪৫ মিনিটে। অনেক চেষ্টা করলেও সময়ের হেরফের তো কিছু না কিছু হবে।কিন্তু আমার ধারনা যে পুরোপুরি ভুল ছিল তা আমি একটু পরেই বুঝতে পেরেছিলাম কারণ সুইডিশরা খুবই সময় সচেতন। সকাল .০০টার মধ্যে নাস্তা সাড়ে১১টা থেকে সাড়ে ১২ টার মধ্যে দুপুরের খাবার এবং .৩০-.০০ মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়া এই নিয়ম সকল সুইডিশরা মেনে চলে।  এজন্যইপ্রথম দিকে যখন .২৫ মিনিটে কাশে ঢুকতাম শিক মুচকি হেসে এড়ড়ফ সড়হরহম বলে সম্বোধন করতেন এবং আমি যখন দু: প্রকাশ করতাম দেরীহবার জন্য তখন তিনি আন্তরিক ভাবেই বলতেন  ওঃং ঙশ।
 লেখা পড়া সংক্রান্ত যে কোন সমস্যার কথা  শিকদের কাছে অনায়াসেই বলা যায়। এবং এখানকার শিকরা সেই সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত স্বস্তি বোধকরেন না। সবচেয়ে ভাল লাগার বিষয় হল শিককে কোন বিষয়ে  প্রশ্ন করা হল , আর তিনি বিষয়টি মনে করতে পারছেন না তখন তিনি দু: প্রকাশ করেসময় নেন। আর যদি বিষয়টি তিনি সঠিকভাবে জানেন না তবে তিনি সরাসরি স্বীকার করেন যে বিষয়টি তিনি জানেন না এবং কার কাছে এই প্রশ্নের উত্তরপাওয়া যাবে তাও বলে দেন। কোন গোঁজামিলের আশ্রয় নেন না। শিকদের সহযোগিতার আরও কিছু উদাহরণ দিই। ড়লবপঃ এর কাজ করার সময় আমির্স খুঁজে পাচ্ছিলাম না। কোর্স কো-অডিনেটরকে  -সধরষ এর মাধ্যমে জানালে তিনি ডবন ড়ভপরবহপব থেকে কয়েকটি ষরহশপাঠিয়ে দেন আমাকেএবং সময় থাকলে আমাকে দেখা করতে বলেন। আমি দেখা করতে গেলে তিনি আমাকে সেন্ট্রাল লাইব্রেরীতে পাওয়া যাবে এমন  টা বই আরও কিছু সোর্সেরলিংক এবং তার কাছে থাকা ১টি বইয়ের সন্ধান দেন। আমি দিনের মধ্যে তার ব্যক্তিগত বইটা ফেরদেবার শর্তে বইটা ধার নিলাম। ঋরহধষ ঊীধসএর আগে কিছু কিছু বিষয়ে আমার দুর্বলতার কথা জানালে কোর্স  কো-অডিনেটর সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সকল শিককে ব্যক্তিগতভাবে -সধরষ করে আমাকেসাহায্য করার জন্য বলেন। এবং আরেকট্ ি -সধরষ করে আমাকে সবার সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। একজন শিক ছুটিতে ছিলেন। তার বিষয়টিকোর্স কো-অডিনেটর নিজে আমাকে সমাধান করে তো দিলেনই উপরন্তু বললেন যে সেই শিক থাকলে হয়তো আমি আরো ভাল করে বুঝতাম। শিকদের এইরকম সহযোগিতায় আমি রীতিমত আবিভত। কারণ আমাদের দেশের শিকরা হন একটু ধফঃরড়হধষ এবং তারা ফর্মালিটি  সধরহঃধরহকরতে পছন্দকরেন। কিন্তু এখানকার শিকরা কোন ফর্মালিটির ধার ধারেন না। প্রথম কাসেই এসেই আমাদের কোর্স কো-অডিনেটর জানালেন তার নাম। তারপরও যখনতাকে স্যার বলে সম্ভোধন করলাম তখন তিনি বললেন আমার বাবা-মা আমার একটা নাম রেখেছে এবং সেই  নামেই যেন তাকে সরাসরি ডাকি। স্যার বলারকোন প্রয়োজন নেই।
  বাংলাদেশে ঋরহধষ বীধস এর আগে ঋড় ঋরষষ সহ বিভিন্ন  ফর্মালিটি সধরহঃধরহকরতে হয়। এতে পরীার গুরুত্বপূর্ণ অনেক সময় নষ্ট হয়।কিন্তু কোর্স ঋরহধষএর এগে শিক -সধরষকরে জানতে চাইলেন আমি পরীায় অংশ নিতে আগ্রহী হলে তাকে যেন আরেকটা -সধরষ করে জানাই।পরীার হলেও গিয়েও আমি অবাক হই কিছু বিষয় দেখে।যথারীতি সকল  ংঃঁফবহঃ উপস্থিত ঢ়বহপরষ কলম ওউ পধ আর খাবার নিয়ে। পাশেরটেবিলে দেখি এক ছাত্র এক বক্স চকলেট আর কলা নিয়ে বসেছে। লিখছে আর খাচ্ছে। আরেক স্টুডেন্ট কাগজ কলমে না লিখে  ষধঢ়ঃড়ঢ় নিয়ে বসে পরীাদিচ্ছে আসলে মুল ব্যাপার হচ্ছে উন্নত বিশ্বের লেখাপাাড়ার পরীার বিষয়টা হচ্ছে আমি বুঝলাম কিনা আর যা বুঝেছি তা বুঝতে পেরেছি কিনা।
একটি বিষয় উল্লেখ না করলেই  নয়। তা হচ্ছে ঢ়ষধমরধরংস ঢ়ষধমরধরংস কে সবচেয়ে খারাপ চোখে দেখা হয় এবং এর শাস্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকেবহিস্কার সেটা মাস থেকে মাস  বা আরও অধিক হতে পারে। ঢ়ষধমরধরংস অর্থ হচ্ছে অন্যের কোন গবেষণা, কাজ বা তথ্য-উপাত্ত নিজের বলেচালিয়ে দেয়া। যে কোন ছাত্র-ছাত্রীকেই বিভিন্ন অ্যাসাইনমেন্ট    ড়লবপঃএর কাজ করতে হয়। কাজ করতে যেয়ে বিভিন্ন তথ্য উপাত্তের সাহায্য নিতেহয়। কিন্তু এই কাজগুলো নিদিষ্ট নিয়ম মেনে করতে হয়। সোর্স উল্লেখ করতে হয় এবং সরাসরি কপি পেস্ট করা নিষেধ্ প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন উন্নতসফটওয়্যার ব্যবহার করে   ঢ়ষধমরধরংস সনাক্ত করার জন্য অনেক ধরনের অনলাইন সফটওয়্যারও বিনামূুল্যে পাওয়া যায়। এজন্যই সকল শিার্থীউদ্ভাবনী কিছু করার জন্য সদা সচেষ্ট থাকে। অন্যান্য দেশের সাথে বাংলাদেশের শিা ব্যবস্থায় অনেক অসমাঞ্জস্যতা রয়েছে। এই বিষয়গুলো এতদিন পরকিছুটা হলেও অনুধাবন করতে পেরেছি। কিছু বাস্তব অভিজ্ঞতা আর বর্তমানের কিছু ঘটনাযধ করাই আমার এই লেখার মূল উদ্দেশ্য। সূদুর প্রবাসসুইডেন) থেকে শিাঙ্গন পরিবারকে আমার প্রাণঢালা অভিনন্দন শুভ কামনা  রইল। (

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন