রবিবার, ৩ এপ্রিল, ২০১১

ভুলের ফাঁদে সরকার : সংকট এগিয়ে আসছে- হাসান ফেরদৌস

সমস্যা নেই, এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি। এটা এখন যেমন সত্য, অতীতেও তেমন ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে। সমস্যা নিয়েই যখন বসবাস, সে ক্ষেত্রে সমস্যা নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। উদ্বেগের সৃষ্টি হয় তখনই যখন সমস্যা সংকটের আকার ধারণ করে। সমস্যা একটি দেশের মানুষকে ভোগায়, সংকট হঠাৎ করে তাদের জীবনযাপন দুঃসহ করে তোলে। ওলট-পালট করে দেয় দৈনন্দিন জীবনের ছকবাঁধা যাত্রা। সবাই একইভাবে সংকটে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় না, কোন শ্রেণী বেশি হয়, কোন শ্রেণী কম। সংকট যত বড় ধার দীর্ঘস্থায়ী হয় তার ক্ষতিকর প্রভাবও হয় তীব্র ও মারাত্মক।
সরকার পরিচালনায় ভুলভ্রান্তি হতেই পারে। কিন্তু এই মুহূর্তে সরকার ভুলের ফাঁদে পড়েছে বলেই মনে হচ্ছে। এই সেদিন ঢাকার নবাবগঞ্জ-দোহার এলাকায় নতুন বিমানবন্দর নির্মাণের সিদ্ধান্তটি যে ভুল ছিল তা সরকার মুখে স্বীকার না করলেও অন্তর দিয়ে বুঝতে পেরেছে। অতি উৎসাহী কিছু লোক বা ২/১ জন মন্ত্রী সরকারকে দিয়ে এই সিদ্ধান্তটি গ্রহণ করিয়ে সরকারকে একপ্রকার হেনস্থা করে ছাড়লেন! সেই জের কাটতে না কাটতেই মন্ত্রিপরিষদে কন্যা সন্তানদের উত্তারাধিকার আইনের যে খসড়াটি অনুমোদন করা হল তাও অত্যন্ত বিতর্কিত। এই মুহূর্তে সরকারের জন্য অনুরূপ একটি আইন পাস করানোর উদ্যোগ কোনক্রমেই ঠিক হয়নি। ৯২ শতাংশ মুসলিম অধ্যুষিত এদেশের আনাচেকানাচে হাজার হাজার মাদ্রাসা আছে। ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর হাতে লাখ লাখ কর্মীবাহিনী আছে, যারা অত্যন্ত সুশৃংখল। এমতাবস্থায় ধর্মীয় রাজনৈতিক দলগুলো দেশের মানুষকে আইনটির বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলতে সক্ষম হবে এবং এ নিয়ে তাদের জন্য আন্দোলন করা সহজ হবে। এছাড়া ওঁৎ পেতে থাকা বিরোধী দলও এসব থেকে সহজেই ফায়দা লুটতে সক্ষম হবে। আর দেশের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে এভাবেই সরকারবিরোধী বড় আন্দোলন গড়ে তোলাও সম্ভব হবে। এমতাবস্থায় দেশের মূল সমস্যার সমাধানে আমলা-মন্ত্রীসহ মহাজোট সরকারের সব রাজনৈতিক শক্তি, রাজনৈতিক সদিচ্ছা নিয়োজিত না করে কন্যা সন্তান উত্তারাধিকার আইন পাসসহ ওই ধরনের অন্যান্য কাজে হাত দেয়ার আগে দশবার ভাবতে হবে।
সরকারকে ‘ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না’ প্রবাদটি মনে রাখতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে যে বলয়টি ঘিরে রেখেছে তাদের মাথা থেকে স্থূল চিন্তাগুলো বাদ দিতে হবে। যখন তখন যা খুশি মন্ত্রিপরিষদে উপস্থাপন না করে দেশের মানুষের মূল সমস্যার দিকে সর্বশক্তি নিয়োগ করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। শ্রেণীস্বার্থবিষয়ক কোন আইন বা বিল কোন শ্রেণীবিশেষ থেকে উত্থাপনের চেষ্টা করা হলে কোন না কোন মন্ত্রী বা নেতাকে তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে হবে। সবসময় কচ্ছপের খোলের মধ্যে মাথা নিয়ে থাকলে চলবে না। মনে রাখতে হবে, সরকার এমনিতেই বহুবিধ সমস্যায় জর্জরিত। তাদের সামনে অনেক কাজ, অথচ সময় কম। তাই এ সময়ে যারা আড়িয়ল বিল ভরাট করে বিমানবন্দর বানানোর বুদ্ধি দিয়েছিলেন বা কন্যা সন্তান উত্তরাধিকার আইন পাসের বুদ্ধি দিচ্ছেন, হয় তারা ভুল করেছেন, না হয় চাটুকারিতা করছেন। দেশের মানুষ যখন দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে জর্জরিত; বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির জন্য দেশে যখন হাহাকার এবং সরকারের হাতে যখন ছোট-বড় প্রচুর প্রকল্প, তখন অহেতুক নিত্যনতুন কিছু সমস্যা উদ্ভাবন করা হচ্ছে কেন তা বোঝা মুশকিল হয়ে পড়েছে।
পদ্মা সেতুর মতো বিরাট-বিশাল প্রকল্প যা বর্তমান সরকারের মেয়াদকালে শেষ করার কথা, ঢাকার যানজট নিরসনে কুড়িল-বাড্ডা-গুলিস্তান ফ্লাইওভারসহ যেসব প্রকল্প রয়েছে সেসব বাস্তবায়ন করা; গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির সমস্যা নিরসনে যেসব প্রকল্প রয়েছে তা বাস্তবায়ন করাসহ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মতো রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে হবে। ১৬/১৭ কোটি মানুষের অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসা, শিক্ষার চাহিদা পূরণের জন্য সরকারের মন্ত্রিপরিষদ, সংসদ সদস্যসহ মহাজোট সরকারের প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মীকে যখন দিনরাত পরিশ্রম করে সেগুলোকে বাস্তবায়নে কাজ করা দরকার, তখন সরকার কেন নিত্যনতুন সমস্যায় জড়াতে চাচ্ছে সেকথাও আমরা বুঝতে পারছি না। সরকার কাদের বুদ্ধিতে চলছে সেকথাও প্রাসঙ্গিকভাবেই এসে যাচ্ছে। নাকি সরকারের মধ্যেই আরেক সরকার আছে, যারা এসব বিষয়ে কলকাঠি নাড়ছেন! সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল, যখন আড়িয়ল বিল ভরাট করে বিমানবন্দর নির্মাণের কথা উঠল, সেই মুহূর্তে কোন মন্ত্রিপরিষদ সদস্য বা এমপি বা কোন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি ‘এই মুহূর্তে তার যথার্থতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন না। মন্ত্রিপরিষদে যখন কন্যা সন্তান আইনের প্রশ্ন উত্থাপিত হল তখনও কেউ তার প্রতিবাদ করলেন না। এভাবে সবাই সর্বক্ষেত্রে ‘জি হুুজুর’ মার্কা হয়ে পড়লে ক্রমশ ভুলের সংখ্যাই বাড়তে থাকবে। আর বারবার ভুল করার নামই হবে ‘ভুলের ফাঁদে আটকে যাওয়া’।
সামাজিক, রাজনৈতিক আর অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে শেষেরটাই মারাত্মক। অর্থনৈতিক সংকট সামাজিক ও রাজনৈতিক সংকটের সূচনা করে তা ঘনীভূত করতে পারে। অর্থনৈতিক সংকটের উৎস দেশের ভেতরেই দেখা যায় সাধারণত। কিন্তু বিশ্বায়নের যুগে উন্নত দেশগুলোতে অর্থনৈতিক সংকট শুরু হলে তার দ্বারা কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় সব দেশই। ২০০৭ সালে আমেরিকায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে সংকট দেখা দেয় তা ছড়িয়ে পড়ে সব উন্নত দেশে, উন্নয়নশীল দেশগুলোও রেহাই পায়নি, যদিও এ কারণে বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থায় তাদের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে ক্ষতির পরিমাণ ছিল তুলনামূলকভাবে কম। বাংলাদেশ আমেরিকা-ইউরোপের ফাইনান্সিয়াল মেল্টডাউন থেকে রক্ষা পেয়েছিল বিশ্বায়নে তার সীমিত ভূমিকার জন্য। এছাড়া সরকার সঙ্গে সঙ্গে সংকটের মোকাবেলায় যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিল সেসব ছিল সময়োপযোগী ও কার্যকর। মন্ত্রণালয় বেশ বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছিল এবং কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে দেউলিয়া ঘোষণা করতে হয়নি। তাদেরকে সরকারি খাত থেকে টিকে থাকার জন্য সাহায্যও পেতে হয়নি। পোশাকশিল্পের রফতানি কমে যাবে বলে যে আশংকা ছিল, তাও জল্পনা-কল্পনার ভেতরই ছিল সীমাবদ্ধ।
কিন্তু অদূরভবিষ্যতে, কিছুদিনের ভেতরই সুনামির মতো একটা আর্থিক সংকট এসে আঘাত করতে পারে বাংলাদেশকে। এটা কেবল অনুমান না, বেশ বাস্তব বলেই বিবেচনা করা প্রয়োজন। এবারে সংকটের যে ঝড় শুরু হয়েছে তার চোখের ভেতর অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতোই বাংলাদেশ বলা যায় অন্যান্য দেশের তুলনায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে একটু বেশিই। এ সংকট শুরু হবে অর্থনৈতিক হিসেবে, প্রভাব ফেলবে সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে। এটা হবে এমন সংকট, যা এর আগে বাংলাদেশকে মোকাবেলা করতে হয়নি। এ বাস্তবতা মনে রেখে সচেতন হয়ে জরুরি ভিত্তিতে এখনই নিতে হবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। দেরি করা হলে বা রুটিন অনুযায়ী দেখা হলে এ অর্থনৈতিক সংকট সামাজিক ও রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি করবে প্রায় অবশ্যম্ভাবীভাবে। প্রায় একই সঙ্গে বহির্বিশ্বে দুটি ঘটনা ঘটেছে, যা থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের সূত্রপাত হবে। প্রথমটি মধ্যপ্রাচ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা, সহিংসতা ও যুদ্ধবিগ্রহ। মিসর, তিউনিসিয়া, ইয়েমেন, বাহরাইন ও লিবিয়ায় বড় ধরনের সহিংসতা দেখা দিয়েছিল কয়েক সপ্তাহ আগে। মিসর আর তিউনিসিয়া আপাতত শান্ত কিন্তু ইয়েমেন ও বাহরাইনে রক্তপাত আর সহিংসতা বন্ধ হয়নি। লিবিয়া আন্তর্জাতিক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। সৌদি আরব, ওমান ও জর্দানে ছোটখাটো আন্দোলন হয়েছে, তবে সেসব দেশে যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়বে না তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে এ জন্য যে, সেখানকার অনেক দেশে হাজার হাজার বাংলাদেশী নাগরিক কাজ করছে। এদের অধিকাংশই দরিদ্র অথবা নিন্মবিত্ত। বিদেশে চাকরি পাওয়ার জন্য এসব বেকার, অর্ধবেকার পরিবারের জমিজমা বিক্রি করে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশায় প্রবাসী হয়েছে। হাড়ভাঙা খাটুনির বিনিময়ে তারা দেশে যে অর্থ পাঠায়, তাই দিয়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের মুখে অন্ন জোটে, কোন কোন পরিবারের ভাগ্যও খুলে যায়। প্রবাসী শ্রমিক-চাকরিজীবীদের পাঠানো অর্থের বদৌলতেই বাংলাদেশ তার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গত কয়েক বছর ধরে দশ বিলিয়ন আমেরিকান ডলার রাখতে পেরেছে। এ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয় বিভিন্ন পণ্য আমদানির জন্য। মধ্যপ্রাচ্যের যেসব দেশে গোলযোগ ও যুদ্ধবিগ্রহ শুরু হয়েছে, তার মধ্যে লিবিয়াতে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশী শ্রমিক কাজ করছিল। এদের সংখ্যা পঞ্চাশ হাজারের উপরে হবে। প্রাণরক্ষার জন্য সবকিছু ফেলে তারা মরুভূমি দিয়ে হেঁটে তিউনিসিয়া সীমান্ত অতিক্রম করে দিনের পর দিন অপেক্ষা করেছে দেশে ফিরে আসার জন্য। এদের অভিযোগ, লিবিয়ায় বাংলাদেশের দূতাবাস তাদের জন্য কিছু করেনি। অন্যসব দেশ তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিলেও বাংলাদেশ সরকার ছিল বেশ পিছিয়ে। আটকেপড়া এবং মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হওয়া শ্রমিকরা বেশিরভাগই এসেছে আন্তর্জাতিক সংস্থার সাহায্যে। অবশ্য সরকার থেকে এ সংস্থাকে সাহায্য করতে অনুরোধ করা হয়েছে। ফিরে আসার পর এসব শ্রমিক সরকারের কাছে আর্থিক সাহায্য চাইবে, বিকল্প চাকরির ব্যবস্থা করা হোক বলে দাবি করবে। তাদের জরুরি ভিত্তিতে আর্থিক সাহায্য বা অন্য ধরনের সাহায্য দেয়া না হলে এরা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে প্রায় অনশনে দিন কাটাতে বাধ্য হবে। ফলে এদের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনার সৃষ্টি হবে এবং এদের জন্য সামাজিক, রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে। এদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য কোন রাজনৈতিক দলের প্রয়োজন হবে না। এরা নিজেরাই এগিয়ে আসবে, কেননা এরা ভুক্তভোগী এবং মধ্যপ্রাচ্যে দেখে এসেছে জনসাধারণ বিক্ষুব্ধ হলে কী করতে পারে। এদের শান্ত করার জন্য, ক্ষোভ প্রশমনের জন্য জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে যে সামাজিক, রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেবে, তা হবে দেশের জন্য ক্ষতিকর। স্বল্পমেয়াদি জরুরি সাহায্যের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার কথা চিন্তা করতে হবে। এর জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটি গঠন করে পরিকল্পিতভাবে কর্মসূচি হাতে নেয়া প্রয়োজন। এটা করতে হবে এখনই, ঠিক যেমন প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর করা হয়ে থাকে। একে জরুরি পরিস্থিতি বলে বিবেচনা করতে হবে।
বাংলাদেশী শ্রমিকদের হঠাৎ দেশে ফিরে আসা এবং জাপানে ভয়াবহ ভূমিকম্প ও পারমাণবিক বিদ্যুৎ স্থাপনায় দুর্ঘটনার ফলে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এবং সরবরাহ বেশ কমে যাবে, যা আর্থিক সংকটের রূপ নিতে পারে। এর মোকাবেলায় জরুরি ভিত্তিতে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। স্বল্পমেয়াদে আমদানি খাতে ব্যয় হ্রাস করতে হবে। খুব প্রয়োজনীয় ছাড়া পণ্য আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার প্রয়োজন রয়েছে। বর্তমানে অনেক ভোগ্যপণ্য আমদানি করা হয়, যা জীবনধারণের জন্য অত্যাবশ্যকীয় নয়। এসব আমদানি বন্ধ করা হলে জীবনযাপন বিপন্ন হবে না। ধনী ও বিত্তবান শ্রেণীর স্বার্থ না দেখে সাধারণ মানুষের স্বার্থের কথা ভাবতে হবে। তাদের জীবনযাপনে যা প্রয়োজনীয়, সেসব ছাড়া অন্যান্য পণ্য আমদানি এখনই বন্ধ করা প্রয়োজন। পাশাপাশি রফতানি বাড়ানোর জন্যও পদক্ষেপ নেয়ার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। অভিবাসী শ্রমিকদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ কমে আসায় অর্থনীতিতে যে চাপ সৃষ্টি হবে, তার নিরসনে বিকল্প সব সম্ভাব্য সূত্র থেকে বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহের/আয়ের কথা ভাবতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন জরুরি ভিত্তিতে পরিকল্পনা গ্রহণ ও কর্মসূচি তৈরি। এখানেও অর্থ মন্ত্রণালয়কেই অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। সব সংকটেই সময় থাকতে ব্যবস্থা নেয়া হলে সংকটের তীব্রতা হ্রাস পায়। যত দেরি হয়, সংকট ততই তীব্র হয়। অবহেলা বা রুটিনমাফিক কাজ করার জন্য যেন এমন পরিণতি দেখা না দেয়, তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। বাংলাদেশ সংকট ও দুর্যোগ মোকাবেলায় যথেষ্ট অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছে। এ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে যে সংকট এগিয়ে আসছে, তার মোকাবেলা করা যাবে এমন আশা করা যায়। কিন্তু সময়মতো সবকিছু করার প্রয়োজন রয়েছে। কেননা টাইম ইজ দি এসেন্স। সব    সংকটে সময়ের সদ্ব্যবহারই সমাধান নিয়ে আসে। এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নেই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন